
ছবিঃ সংগৃহীত
দাফনের দেড় মাস পর ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরল জীবিত কিশোর! ট্রেনে কাটা পড়ে ছিন্নভিন্ন লাশ মনে করে ছেলেকে দাফন করেছিলেন বাবা-মা। কিন্তু দেড় মাস পর সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরে সবাইকে জানিয়ে দিল—সে এখনো বেঁচে আছে!
গত ২৮ মার্চ শুক্রবার মৃত ভেবে দাফন করা তোফাজ্জল হোসেন তুফান নিজ বাড়িতে ফিরে এলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্বজনরা হতবাক হয়ে যান। তাদের বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে দাফন করা ছেলেটি তুফান ছিল না!
১৪ বছর বয়সী তুফান জানুয়ারির ১৫ তারিখ বাবা-মাকে খুঁজতে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে যায়। দীর্ঘদিন বাড়িতে না ফেরায় তার বাবা আবু সাঈদ আলমডাঙ্গা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে গাইবান্ধায় একটি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অজ্ঞাত এক কিশোরের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আহত কিশোরের ছবির সঙ্গে তুফানের চেহারার অস্বাভাবিক মিল দেখে তার বাবা-মা গাইবান্ধায় ছুটে যান।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে গুরুতর আহত ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছেলেটিকে দেখে তুফানের মা আমেনা বেগমের মনে কিছুটা সন্দেহ থাকলেও, মানবতার খাতিরে ছেলেটিকে নিজের সন্তানের মতো সেবা করতে থাকেন।
কিন্তু পাঁচদিন পর ছেলেটি মারা গেলে তুফানের বাবা-মা তাকে তুফান ভেবে নিজ গ্রাম আলমডাঙ্গার বোদনাথপুরে দাফন করেন।
যে ছেলেকে তারা কবর দিয়েছিলেন, সেই তুফানই দেড় মাস পর সুস্থ শরীরে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। সবাই হতভম্ব! তুফান জানায়, সে ঢাকায় অবস্থান করা বাবা-মাকে খুঁজতে আড়াই মাস আগে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় চলে গিয়েছিল। পরে ঢাকার শ্যামলীতে একটি লোহার দোকানে কাজ নেয়। হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় সে বাড়ি ফেরার সুযোগ পাচ্ছিল না।
এখন প্রশ্ন উঠেছে—যে ছেলেটিকে তুফান ভেবে দাফন করা হলো, সে আসলে কে? এ নিয়ে এলাকায় নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, "তুফান নামে একটা ছেলে নিখোঁজ ছিল এবং তার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছিল। এখন সে ফিরে এসেছে, বিষয়টি আমরা গাইবান্ধা সদর থানাকে অবগত করেছি।"
এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, দাফনের পর এমন ঘটনা সত্যিই অবিশ্বাস্য! এখন দাফন করা কিশোরের আসল পরিচয় বের করা এবং তার পরিবারের সন্ধান করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ইমরান