ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

উত্তরবঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রা, দেখা নেই বৃষ্টির

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী।

প্রকাশিত: ২১:৩১, ২৯ মার্চ ২০২৫

উত্তরবঙ্গে বাড়ছে তাপমাত্রা, দেখা নেই বৃষ্টির

উত্তরবঙ্গে গরম আরও বাড়তে চলেছে। চৈত্রের শুরু থেকেই বসন্তের আমেজকে দূরে ঠেলে দিয়ে তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এখনো তা হয়নি। বরং দিন দিন রোদের তীব্রতা বাড়ছে, ফলে রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় অস্বস্তিকর আবহাওয়া বিরাজ করছে।

গত কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে। বলা যায়, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গরম। গত ৭২ ঘণ্টায় দিনের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। রাতের তাপমাত্রাও ধাপে ধাপে বাড়ছে। শনিবার (২৯ মার্চ) রংপুর বিভাগের নীলফামারী, রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এদিকে, তিস্তা পাড়ে বয়ে যাচ্ছে লু হাওয়া, আর সব জেলাতেই শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।

অনেকে মজা করে বলছেন, শীতের সময় আবহাওয়া অফিস ঘোষণা দেয় যে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, আর তাপমাত্রা নেমে গিয়ে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। এখন উল্টোভাবে ঘোষণা আসতে পারে—তাপমাত্রা বাড়ছে, গরম বাড়ছে, মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

রাতের তাপমাত্রাও বেড়ে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় দেড় ডিগ্রি বেশি। তীব্র গরমের কারণে এই অঞ্চলের মানুষজন চরম অস্বস্তিতে পড়বে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তিস্তা পাড়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীতে পানির প্রবাহ কম থাকায় চরের ফসলি জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। ছোট বালকদের দেখা যাচ্ছে গরম সহ্য করতে না পেরে তিস্তা সেচ ক্যানেলে দাপাদাপি করে গোসল করছে। নীলফামারীর চাঁদের হাট এলাকার সেচ ক্যানেলে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

তীব্র রোদের কারণে সেচনির্ভর বোরো ধানের জমিগুলোর পানি দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। তিস্তা সেচ ক্যানেলের কৃষকরা কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও, ডিজেল ও বিদ্যুৎ চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহারকারী কৃষকদের বারবার সেচ দিতে হচ্ছে। কৃষকরা জানান, চড়া রোদ মাথার ওপর থাকায় জমিতে পানি টিকছে না, ফলে বোরো ধানের চারা বাঁচাতে ঘন ঘন সেচ দিতে হচ্ছে।

তবে তিস্তা সেচ ক্যানেল কমান্ড এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন, ক্যানেলের পানির সরবরাহ ভালো থাকায় তাঁরা বোরো ধান, গমসহ বিভিন্ন রবি শস্যের জমিতে সহজেই সেচ পাচ্ছেন। তবে প্রচণ্ড রোদের কারণে বাইরে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে, শরীরে জ্বালাপোড়া অনুভূত হচ্ছে।

এদিকে, শেষ রমজান ও আসন্ন ঈদ উপলক্ষে শহরের বাজারগুলোতে কেনাকাটার ধুম লেগেছে। প্রচণ্ড রোদ ও তাপমাত্রার কারণে মানুষজন ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছে।

নীলফামারীর সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হাকিম জানিয়েছেন, তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়ছে, এবং এবারের তীব্র তাপদাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তবে এখনো বৃষ্টির কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।

নুসরাত

×