
ছবি: সংগৃহীত
যশোরের কেশবপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এসি চালানোকে কেন্দ্র করে মুয়াজ্জিন আব্দুল খালেককে বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে। পবিত্র রমজান মাসে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
মুয়াজ্জিন আব্দুল খালেকের অভিযোগ, গত ২১ মার্চ, রমজানের ২০তম দিনে আসরের নামাজের সময় এক মুসল্লি কুরআন তেলাওয়াত করতে এসে মসজিদের এসি চালান। এ সময় মসজিদ কমিটির সভাপতি নিজামউদ্দিন এসে এ বিষয়ে কৈফিয়ত চান এবং তার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ঘটনার পাঁচ দিন পর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদের মাধ্যমে তার কাছ থেকে মসজিদের চাবি নিয়ে নেওয়া হয় এবং তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মুয়াজ্জিন আব্দুল খালেক বলেন, “আমি রোজা রেখে নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এসি চালানো নিয়ে সভাপতি সাহেব আমার সঙ্গে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় কথা বলেন, যা আমার জন্য অপমানজনক ছিল। আমি ধৈর্য ধরার চেষ্টা করলেও উনি ক্রমাগত আমাকে বকাঝকা করতে থাকেন। পরে পাঁচ দিন পর সাধারণ সম্পাদক এসে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে আমাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানান।”
অন্যদিকে, মসজিদ কমিটির সভাপতি নিজামউদ্দিন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা তাকে বরখাস্ত করিনি, বরং তিনি নিজেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। আমি যখন মসজিদে প্রবেশ করি, তখন দেখি পাঁচটি এসি চালু রয়েছে। আমি জানতে চাই, আজানের আগে কেন এসি চালানো হলো। তখন মুয়াজ্জিন আব্দুল খালেক উত্তেজিত হয়ে বলেন, তিনি চাকরি করবেন না। আমি বলি, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগপত্র দিতে হবে।”
এ ঘটনার সূত্রপাত হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক শিশুর মাধ্যমে। জানা যায়, রাফসান নামের এক শিশু কুরআন পড়ার জন্য মসজিদে এসে এসি চালিয়ে বসে। মুয়াজ্জিন তখন আজান দিচ্ছিলেন, ফলে তিনি বিষয়টি খেয়াল করেননি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মসজিদ কমিটির সভাপতি ক্ষুব্ধ হয়ে মুয়াজ্জিনের সঙ্গে কঠোর ভাষায় কথা বলেন এবং পরবর্তীতে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অনেকেই এটিকে অমানবিক ও অন্যায় বলে মন্তব্য করেছেন। মুয়াজ্জিনের প্রতি এমন আচরণ কেন করা হলো এবং মসজিদ পরিচালনায় স্বচ্ছতা কতটুকু বজায় রাখা হচ্ছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/AKmPtmXyz0k?si=52Ccv5FcWCpx7A9V
এম.কে.