ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

দুইদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, অস্বস্তিতে জনজীবন

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস

প্রকাশিত: ১৯:১০, ২৯ মার্চ ২০২৫

দুইদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, অস্বস্তিতে জনজীবন

দুইদিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে যশোরে। শনিবার বেলা চারটার দিকে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস। শুক্রবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা  ছিলো যশোরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দুদিন ধরে তাপদাহে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে এদিন ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষেরা গরমে নাভিশ্বাস উঠে যায়। তবে দাবদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন রিকশাচালকরা। চাইলেই গরমে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ নেই তাদের। জীবিকার তাগিদে এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করতে হচ্ছে এরপরও গরমের কারণে কমেছে তাদের আয়ও। এ ছাড়া তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণিকুলে। এ আবহাওয়া কয়েকদিন অব্যহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।  মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইতে থাকায় জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বিশেষ প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ ছাতা মাথায় অথবা রিকশায় চলাচল করলেও সে সংখ্যা খুবই কম।

আর কয়েক দিন পর ঈদুল ফিতর। বিগত বছরগুলোতে ঈদ সামনে রেখে শহরের বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি এবং বিপণিবিতানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা চললেও এ বছর গরমের কারণে শহরে দিনের বেলা মানুষের উপস্থিতি কম। কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী আলতাপ হোসেন বলেন, 'তাপপ্রবাহের কারণে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম। যে কারণে বেচাকেনায় প্রভাব পড়েছে। গত কয়েক দিন তাপদাহ হলেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে।' শহরের দড়াটানাতে হাবিবুর রহমান নামে এক এ্যাডভোকেট বলেন, 'দু দিন যশোরে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। রৌদুরে সব পুড়ে যাচ্ছে। যেহেতু দু’একদিন পরেই ঈদ। তাপদাহ হলেও বাধ্য হয়ে মার্কেটে আসতে হচ্ছে। এসেই গরমে কাহিল হয়ে পড়েছি।' তবিবর নামে এক রিকসা চালক বলেন, 'মনে হচ্ছে আগুন উড়ছে। রিকসা চালাতে কষ্ট হচ্ছে, জীবিকার তাগিদে বের হতে হচ্ছে। পিচের তাপের আঁচ মুখে লাগছে; মনে হচ্ছে মুখ পুড়ে যাচ্ছে।' চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে তাঁরা মাথায় টুপি অথবা গামছা পরে চলাচল করছেন। কৃষিকাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা ক্লান্ত দেহ নিয়ে ছায়ায় বিশ্রাম করছেন। গরমের হাত থেকে শরীরকে শীতল করে জুড়িয়ে নিতে শহর থেকে কিশোর-যুবকেরা দল বেঁধে ছুটছে গ্রামাঞ্চলে নলকূপগুলোতে গোসল করতে।

এদিকে সাধারণ মধ্যে এপ্রিলে তীব্র তাপদাহ বয়ে যায় যশোরে। তবে এবার মার্চেই যশোরে অব্যহত তাপদাহে জনমনে অস্বস্তি ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। সচেতন মহল বলছে, সাধারণ মার্চে তেমন একটা তাপদাহ বিরাজ করে না। তবে এবার আগেভাগে তাপদাহ শুরু হওয়াতে প্রাণীকূলকে আরোও ভোগান্তি পোহাতে হবে বলে ধারণা করছেন তারা। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের ৩০ জুনে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে। এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ১৯৭২ সালে ১৮ মে। সেদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিলো ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজু

×