ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

আবাসন প্রকল্পের ১৮০ ঘরে এখন গরু ছাগলের বসবাস!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল,পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ২৯ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৪:৫৩, ২৯ মার্চ ২০২৫

আবাসন প্রকল্পের ১৮০ ঘরে এখন গরু ছাগলের বসবাস!

ছবি: সংগৃহীত

বাউফলের দক্ষিন-কর্পূরকাঠী ও বটকাজল দুইটি আবাসন প্রকল্পে এখন আর ভূমিহীনদের বসবাস নেই । ১৮০টি পরিবারের জন্য নির্মিত এই দুই আবাসন প্রকল্পে বর্তমানে কোন পরিবার বসবাস করছেনা। পরিত্যাক্ত ঘরগুলো গোয়ালঘর হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আবসান প্রকল্পের ঘরগুলো মাদকসেবিদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, জাপান সরকারের অর্থায়নে ২০০৮ সালে কর্পুরকাঠী আবাসন প্রকল্পটির উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই সমস্যার অন্ত নেই এখানে। নেই স্কুল, মসজিদ, কবরস্থান ও যাতায়েতের রাস্তা। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্যানেটারী লেট্রিন ও গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে সেগুলো ব্যাবহার অনুপোযোগি হয়ে পড়ে আছে। নলকূপে উঠছে না পানি। নির্মানের পর অকেজো হয়ে পড়লে সংস্কার না হওয়ায় দক্ষিন কর্পুরকাঠী আবাসনের সব ঘলগুলো এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে লোকজন আবস প্রকল্পের বসতি ছেড়ে অনত্র চলে গেছেন।

পরিত্যাক্ত ঐ ঘরগুলো গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয় কয়েক প্রভাবশালী। আবাসন প্রকল্পের ওই পরিত্যক্তঘরে গরু-ছাগলের বাস। সন্ধ্যার পরে কোন কোন ঘরে বসে মাদকসেবীদের নেশার আসর।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে এই আবাসন প্রকল্পের কোন তথ্য নেই। প্রকল্পের ফাইল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের লোকজন ।

একই অবস্থা নওমালা ইউপির বটকাজল আবাসন প্রকল্পের (ফেইজ-২)। সরেজমিনে দেখা যায়, ৮০ টি পরিবারের জন্য নির্মিত ঘরগুলোর মধ্যে সেখানে বাস করছে ১২ টি পরিবার। ঘরের চালার টিন মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে চালার টিনের ছিদ্র দিয়ে। চুরি হয়ে যাচ্ছে পরিত্যাক্ত ঘরের টিন। ১০টি গভীর নলকুপের মধ্যে ৭টিই বিকল। টয়লেটগুলো চাওনি ও টিনের বেড়া ভেঙ্গে গেছে। পানি সরবরাহ করার জন্য নেই কোন পুকুরের ব্যবস্থা। যেন অসহায় হতদরিদ্রদের এক দূর্বিসহ জীবন-যাপন।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে বটকাজল অবাসন প্রকল্পের প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারের জন্য ০.০৪৪ একর করে ৮০টি পরিবারের জন্য মোট ৩.৫৫ একর জমি বরাদ্দের দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে।

এছাড়া ভূমিহীন পরিবারদের জন্য ৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ঋণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আবাসন প্রকল্পের কোন পরিবার সে ঋন নেয়নি। ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা দুই সন্তানের জননী জোসনা বেগম জানান, স্বামী আবুল সরদারের নিজস্ব কোন জায়গা জমি না থাকায় নিরুপায় হয়ে ছেলে-সন্তান নিয়ে তিনি আবাসন প্রকল্পে ওঠেন । জীবনযাপনের নুন্যতম কোন সুযোগসুবিধা এখানে নেই। বহু কষ্ট করে দিন মজুরের কাজ করে দিন যাপন করছেন তিনি। নাগরীক সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশানের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আবাসনের নারী-পুরুষরা।

আসিফ

×