
শেষ সময় ঈদের কেনাকটায় ব্যস্ত নারীরা
আর মাত্র দুই দিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। উৎসবের আনন্দ পেতে শেষ সময়ে জমে উঠেছে জেলাসহ উপজেলা পর্যায়ের ঈদ বাজার।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোজা শুরুর পর থেকে বিশেষ করে ২০ রমজানের পর থেকে তাদের বিক্রি বেড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, কামারখন্দ, কাজীপুরসহ জেলা সদরের বিভিন্ন মার্কেট এবং ফুটপাতের সবখানেই এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। পরিবারের সদস্যরা কেউ নিজের জন্য, কেউ আত্মীয়-স্বজনদের জন্য নতুন জামা কাপড়, জুতা, শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি ও বাচ্চাদের পোশাক ক্রয় করছেন।
উপজেলা পর্যায়ের সবচেয়ে বড় ও বাহারি পোশাকের সমাহারে সাজানো বেলকুচি, শাহজাদপুর এবং উল্লাপাড়ায় শপিং মলেও ক্রেতাদের ভিড়। শুক্রবার সিরাজগঞ্জ শহরের শপিং মল ও উপজেলা পর্যায়ের মার্কেটগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছেএ বছর শাড়ির চেয়ে থ্রি পিসের চাহিদা অনেক বেশি। পাকিস্তানি থ্রি পিসও খুঁজছেন অনেক ক্রেতা। তবে ভারতীয় জামা-কাপড় মেয়েদের পছন্দের তালিকা রয়েছে।
শেষ মুহূর্তে জুতা, প্রসাধনী, বাচ্চাদের পোশাকের দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। অভিজাত শপিং মলের চেয়ে ফুটপাতের দোকানে ভিড় সবচেয়ে বেশি। ফুটপাতের ক্রেতারা পছন্দের চেয়ে পকেটের দিকে নজর রাখছেন বেশি। সন্তানকে সন্তুষ্ট করার জন্য নতুন পোশাক তাকে দিতেই হবে, দিচ্ছেনও।
সৈয়দপুরে রাতদিন চলছে কেনাকাটা
স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, সৈয়দপুরে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। অসম বেঙ্গল রেলকারখানার কারণে এখানকার অধিবাসীরা বাঙালি-বিহারির মিশ্রণে কথা বলেন। ফলে দুই ভাষাতেই সারারাতই চলছে কেনাকাটা। কেউ কেউ সেহেরি শেষ করে আসছেন কেনাকাটা করতে। এ এক আজব শহর। বিভিন্ন দোকান ও রেডিমেড দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। এখন কাটা কাপড় খুব একটা বিক্রি হচ্ছে না।
কারণ দর্জিরা কাপড় নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন ঈদ বাজারের কারণে সৈয়দপুরে যেহেতু ২৪ ঘণ্টা মার্কেট খোলা থাকছে সেহেতু বিভিন্ন এলাকার দূরদূরান্তের ক্রেতারাও ছুটে আসছেন। তরুণীরা পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে কিনছেন কানের দুল, চুড়িসহ প্রসাধনসামগ্রী। ফলে এসব দোকানে ভিড় বেড়েছে প্রচ-। দোকানিদের কথা বলার ফুরসত নেই। তেমনি ক্রেতা দাঁড়ানোর মতো জায়গাও নেই। তবুও কিনতে হবে।
তাই হুড়াহুড়ির মধ্যে ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনাও। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাঙালিরা নতুন জামা-কাপড় কেনা থেকে কিছুটা বিরত থাকলেও বিহারিদের (অবাঙালি) নতুন কাপড় চাই চাই। তারা এ ঈদে পরিবারের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজনের নতুন কাপড় কিনে থাকেন। শহরের মুন্সীপাড়ার বিহারিক্যা¤েপর বাসিন্দা মুন্না (৪৫) বলেন, আমরা সবাই এ ঈদে নতুন কাপড় কিনেছি। আগে থেকেই আমাদের প্রস্তুতি থাকে।
সংসারের অন্য খরচ কমিয়ে নতুন জামা-কাপড় কিনতেই হবে। এটাই আমাদের রেওয়াজ। শহরের চুড়িপট্টিতে কথা হয় কলেজছাত্রী শামসুন নাহারের সঙ্গে। তিনি বলেন, কয়েকটি থ্রি পিস কিনেছি। এগুলোর সাথে ম্যাচিং করে চুড়ি, কানের দুল, জুতা ও ভ্যানিটি ব্যাগ কেনার জন্য এসেছি।
দাউদকান্দিতে বিক্রি কম
নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি, কুমিল্লা থেকে জানান, দাউদকান্দিতে ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বাহারি ডিজাইনের পোশাকে সাজানো হয়েছে উপজেলার বিপণি বিতানগুলো। বিপণি বিতানগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে ক্রেতা সমাগম। বিক্রেতারা জানিয়েছেন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতা থাকলেও বিক্রি কম। ক্রেতারা বলছেন অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের দাম অনেকটাই বেশি। তারপরও পরিবারের ঈদ আনন্দের কথা ভেবে কিনতেই হচ্ছে।
অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। দাউদকান্দি পৌর সদরের চেয়ারম্যান মার্কেটের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বিপুল সরকার বলেন, ঈদে অনেক দোকানেই ক্রেতা আকৃষ্ট করার জন্য মূল্য ছাড়ের কথা লেখা থাকে। কোনো কোনো ক্রেতা আসছেন পছন্দ করছেন, কিনে নিচ্ছেন পছন্দমত পোশাক। যদিও এবার গতবছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি। ক্রেতারা পোশাকের দাম শুনে বিরক্ত হয়ে চলে যাচ্ছেন। মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড় আছে, তবে তুলনামূলক বিক্রি কম।
মাগুরায় দর্জিদের দম ফেলার সময় নেই
নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, দর্জিদের দম ফেলার সময় নেই। মার্কেট, দোকান ও বাজারে ঈদের বেচা কেনা চলছে। দিন রাত চলছে নতুন পোশাক তৈরির কাজ। শহরের মার্কেট, বাজার এবং বিভিন্ন দোকানে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।