ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৭ চৈত্র ১৪৩১

এয়ারকন্ডিশনের যুগেও ভালোবাসা ও আস্থার নাম ’তালের পাখা’

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২৮ মার্চ ২০২৫

এয়ারকন্ডিশনের যুগেও ভালোবাসা ও আস্থার নাম ’তালের পাখা’

ছবি: সংগৃহীত।

বৈদ্যুতিক পাখা কিংবা এয়ারকন্ডিশনের যুগের আগে অনেকের শীতলতার একমাত্র ভরসা ছিল 'তালের পাখা'। এটি শুধু গরমের ক্লান্তি দূর করত না, বরং বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিল। কালের বিবর্তনে প্রযুক্তির নতুন দিগন্তে তালপাতার পাখার সেই ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তির পথে।

বিশ শতকের আগ পর্যন্ত গ্রামবাংলায় তালপাতার পাখার ব্যাপক কদর ছিল। হাট-বাজার কিংবা নববর্ষের মেলায় প্রতিটি দোকানে সারি সারি তালপাতার পাখা সাজানো থাকত। অনেকে মেলা থেকে হাত পাখা কিনে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরতেন। তখনো গ্রামে বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি, আর সুইচ টিপে ফ্যান বা এয়ারকন্ডিশন চালানোর সুযোগ ছিল কল্পনাতীত। তাই গরমের হাত থেকে বাঁচতে তালপাতার পাখাই ছিল সবার প্রথম পছন্দ।

সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা আমেনা খাতুন শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, "আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন বাবাকে তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করতাম। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়িকেও বাতাস করতে হয়েছে। তখন তো ফ্যান ছিল না! এখন আর সে দিন নেই। ফ্যানের সুইচ টিপলেই বাতাস পাওয়া যায়।"

ইলেকট্রনিক প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় তালপাতার পাখা আজ বিলুপ্তির পথে। তবে এটি এখনও বাঙালির হৃদয়ে এক আবেগময় অনুভূতি তৈরি করে। গ্রামবাংলার মানুষ আজও এই চিরচেনা তালপাতার পাখাকে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে দেখে।

সমাজসেবী রুদ্র কমল বলেন, "তালপাতার পাখার সেই ঐতিহ্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে শত বছর পরও এটি আমাদের সংস্কৃতি ও স্মৃতিতে অমলিন থাকবে।"

নুসরাত

×