
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, অনেকেই মনে করেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী মানেই নৌকায় ভোট দেয়। এই ধারণাটা পাল্টাতে হবে। আওয়ামী লীগ মনে করতো কিছু দিই আর না দিই, ভোটটা কিন্তু আমরাই পাবো। তাহলে আপনাকে কিছু দেবে না। এটাই হয়েছে এতো দিনে। তাই তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বলেন যারাই আপনাদের পাশে দাঁড়াবে তাদেরই ভোট দেবেন।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের রানীগঞ্জ এলাকায় দক্ষিণেশ্বর দেবেত্তর এস্টেট পটেশ্বরী কালি মন্দির পরিদর্শনের পর এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সারজিস বলেন, যারা আপনাদের কথা শুনবে, আপনাদের হয়ে কথা বলবে, এবং আপনাদের কাজগুলো করবে, আপনাদের জন্য আপনাদের পাশে দাঁড়াবে, আপনাদের ভোটটা হবে তাদের জন্য। তিনি বলেন, আটোয়ারী, পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ায় আমরা যারা আছি, আমরা যেন সবাই মিলেমিশে থাকি। এই দেশটা নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের মানুষের নয়। যারা এই দেশের নাগরিক, তাদের প্রত্যেকের এই দেশ।
তিনি বলেন, আমরা তরুণ প্রজন্ম একসঙ্গে হয়ে যারা এই গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছি। পরবর্তী যারা বাংলাদেশের রাজনীতি করতে ইচ্ছুক, আমরা সে জায়গা থেকে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করেছি। প্রত্যেকটি গ্রাম, ইউনিয়ন এবং উপজেলায় নতুন দল এনসিপির পক্ষে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কারণ আমরা যারা জনপ্রতিনিধি হতে চাই, তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে দেখলে আসল বিষয়টা বুঝতে পারবো। মানুষ কীভাবে আছে বা তারা কী চায়।
তিনি আরও বলেন, এনসিপির পক্ষে পুরো বাংলাদেশে আমরা যারা রয়েছি, সব মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। সে বিষয়গুলো মাঠে গিয়ে তুলে ধরছি। কারণ খুব স্বাভাবিকভাবেই গ্রামগঞ্জে আমার পার্টির নাম ও মার্কার নাম জানা দরকার। আমি কী কাজ করতে চাই, আমার মন-মানসিকতা কেমন।
সারজিস আলম বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমি খালি নির্বাচনের সময় আছি, নাকি অন্য সময় আছি, না জনগণের দরকার, তখন আছি। এই জিনিসগুলো নিয়ে আমরা সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় ও জনসংযোগ করছি। এভাবে আমরা আমাদের দলের পক্ষে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে মানুষের সাথে মিশবো, মানুষের ব্যথা শুনবো। সে অনুযায়ী কাজ করব।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর আমরা বিভিন্ন সময় শুনেছি, অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা শুনেছি, অনেকের স্থাপনায় হামলা হয়েছে। এটা আমাদের হৃদয়ে রক্তরণ করে। কারণ যারা এগুলো করেছে, তারা হচ্ছে সুযোগ সন্ধানী। তারা যে দখলদার, এই কাজগুলো আওয়ামী লীগের আমলেও করেছে, এখনো স্বার্থের জন্য করবে। এরা কোনো দলের না, এরা হচ্ছে ধান্ধাবাজ।
এ সময় সারজিস হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দেন। এ সময় রানীগঞ্জ এলাকায় দক্ষিণেশ্বর দেবেত্তর এস্টেট পটেশ্বরী কালি মন্দিরের ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। সারজিস আলমকে মন্দির কমিটি টুপি ও জায়নামাজ উপহার প্রদান করে।
আফরোজা