
ছবি: জনকণ্ঠ
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে মহামূল্যবান আগর গাছ। সম্প্রতি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটকের কাছ থেকে কোটি টাকা মূল্যের একটি আগর গাছের মাথা কেটে নিয়ে যায় স্থানীয় চোর চক্র। প্রায় ১০ ফিট গোলাকার ও ১৫০ ফিট উচ্চতার এই আগর গাছটির মাথা করাত দিয়ে কেটে নিয়ে যায়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা।
বন বিভাগের লোকজন দায়ীত্বরত অবস্থায় কিভাবে এত নিকট থেকে গাছে উঠে হাত করাত দিয়ে কেটে নিয়ে যায় গাছের মাথা, তা নিয়ে জনমনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। আগর গাছটি আসলে চুরি হয়েছে নাকি বিক্রি করা হয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরেজমিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বনের ভিতরে গিয়ে দেখা যায় লাউয়াছড়া স্টুডেন্ট ডরমিটরি এলাকা থেকে একটি ও লাউয়াছড়া বনের প্রধান ফটকের সামনে থেকে একটি আগর গাছের মাথা কেটে নেওয়া হয়েছে।
গুঞ্জন উঠেছে এসব গাছ কাটা এবং বন্যপ্রাণী শিকারের সাথে বন বিভাগের বন প্রহরী ও স্থানীয় বন টহল দলের সদস্য (সিপিজি) সম্পৃক্ত। পাঁচ আগষ্টের পর থেকে গাছচোর ও বন্য প্রাণী শিকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, আগর গাছ দিয়ে মূল্যবান পারফিউম তৈরি করে তা বিদেশে বিক্রি করা হয়, যার কারণে বাজারে এই গাছের মূল্য অনেক বেশি। সেজন্য গাছচোর চক্র আগর গাছ চুরি করছে।
বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. নাজমুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই আমি এবং এসিএফ মহোদয় ঘটনাস্থলে যাই, গিয়ে তল্লাশি চালাই। আমরা তদন্ত করছি, এ ঘটনায় কারা জড়িত তাদের খোঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বন বিভাগের লোকজন থাকা অবস্থায় প্রধান ফটকের কাছ থেকে কিভাবে আগর গাছের মাথা কেটে নিল চোর চক্র, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা বা যাহারা জড়িত থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম জানান, একটি আগর গাছ কাটার বিষয়ে তিনি জানেন, তবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটকের কাছ থেকে আগর গাছের মাথা কাটার বিষয়ে তিনি জানেন না। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বলেন তিনি।
এম.কে.