
কিশোরগঞ্জ : আনোয়ারা সুপার মার্কেটে কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতরা
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন নিজের পছন্দের পোশাক পরিধান করে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে উৎসবে অংশ নিতে বিভিন্ন বাজারের বিজনেস শপগুলোতে এখন উপচেপড়া ভিড়। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
কিশোরগঞ্জ
তারুণ্যের পোশাক বিক্রয়ে এ বছর ঈদ বাজারের কেনাকাটায় শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে ঈদকে সামনে রেখে বেশিরভাগ সময় যেখানে থাকা হয় সেই ঘরকেও অন্যের কাছে দৃষ্টিনন্দনীয় করতে হবে। তাই ঘরকে মনেরমতো রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত এখন অনেকেই। উৎসবের দিনগুলোতে ঘর সাজানোর জন্য নববিবাহিত অথবা ফ্যাশনেবল অনেক জুটি কিনছেন জমকালো বিছানার চাদর, কুশন-পিলো কাভার, পর্দা, ওয়ালম্যাট, শোপিস ইত্যাদি। ছাড়ের সুযোগে অনেকে কিনছেন নতুন ফার্নিচার, মোবাইল ফোন, ফ্রিজের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস। আবার মধ্য ও উচ্চবিত্তের অনেক ক্রেতারাই কিনছেন ঘরের তৈজসপত্র ও ডিনার সেট। রোজার শেষ মুহূর্তের দিনগুলোতে প্রতিটি মার্কেটই ভিড় বাড়ছে।
অনেক বিক্রেতা জানান, শেষ মুহূর্তে শাড়ি বিক্রি বেড়েছে। ঈদের নতুন কালেকশনের জন্য অনেকে রোজার শেষের দিকে মার্কেটে আসেন। কেনাকাটায় বিভিন্ন স্তরের মানুষ যে যার সাধ্যমতো পছন্দের জামা-কাপড়, জুতা ইত্যাদি কিনছেন। শহরের প্রতিটি মার্কেটেই রংবেরঙের ব্যানারে ও চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঈশাখাঁ সুপার মার্কেট, নিরালা টাওয়ার, আনোয়ার সুপার মার্কেট, খালেক মার্কেট, নতুন বাজার, ঈশা খাঁ রোড, বড়বাজার ও তেরীপট্টির মার্কেটগুলোতে ঘুরে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
অনেক ক্রেতা জানান, এবার পণ্যসামগ্রীর দাম কিছুটা বেশি। দোকান ভেদে দামেও বেশ পার্থক্য রয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, নানা কারণে গত তিন-চার মাস তাদের কোনো ব্যবসা ছিল না। বিষয়টি মাথায় রেখে টিকে থাকার জন্য তারা কম লাভে ব্যবসা করছে। এদিকে নির্বিঘ্নে সাধারণ মানুষ যাতে বাজার করতে পারেন সেজন্য মার্কেটগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিনেরবেলায় রাস্তায় যানজট ও দোকানে প্রচণ্ড ভিড় থাকায় অনেকেই রাতে মার্কেটে যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
বগুড়া
আর মাত্র কয়েক দিন। খুশির ঈদ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বগুড়ার মার্কেটগুলো ক্রেতাদের সরগরমে জমে উঠেছে। শহরের ফুটপাত থেকে বিপণিবিতান সবখানে মানুষের স্রোত। পছন্দের কেনাকাটা সারতে বিপণি বিতানগুলোতে যেমন পা রাখার জায়গা নেই তেমনি ফুটপাতের দোকানে নিম্নআয়ের লোকজন ও ভিড় করছেন সাধ্যমতো কেনাকাটার জন্য। তৈরি পোশাক ও জুতা-স্যান্ডেল. পাঞ্জাবি ও প্রশাসধনী সামগ্রীর দোকানগুলোতে এখন ক্রেতাদের সমাগম সবচেয়ে বেশি। শহরের অভিজাত এলাকার বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান সবখানেই ক্রেতাদের কেনাকাটায় সরগরম হয়ে উঠছে। ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড় শহরের নিউ মার্কেটে। তবে নিম্ন মধ্যবিত্তদের মার্কেট হিসেবে পরিচিত হকার্স মার্কেটে ঈদের জমজমাট কেনাকাটায় সরব হওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। একইতালে চলছে শহরের অভিজাত বিপণিবিতান পুলিশ প্লাজা, রানা প্লাজা আল আমিন সুপার মার্কেট, শেখ শরীফ মার্কেটসহ বগুড়ার ব্রান্ড শপিং এরিয়া হিসেবে পরিচিত শহরের জলেশ^রীতলা এলাকার দোকানগুলো। সেখানেও একই রকমভাবে ক্রেতারা পছন্দের কেনাকাটা করছেন। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা।
মাগুরা
মাগুরায় শেষ মুহূর্তে ইদ বাজার জমজমাট আকার ধারণ করেছে। ফুটপাতের দোকানে দোকানে স্বল্পআয়ের মানুষের উপচে পড়া ভিড় লেগেছে। এখান স্বল্পআয়ের মানুষ ইদ বাজার করছেন। এই সমস্ত দোকানে পণ্যেও দাম কিছুটা কম। সুন্দর আলোকসজ্জা সকলের দৃষ্টি কাড়ছে। ক্রেতারা বর্তমানে জমজমাটভাবে কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারণায় চারদিক মুখরিত হয়ে উঠছে। জুতার দোকানগুলোতে ভালো ভিড় হচ্ছে। নানা ডিজাইয়ের জুতা খুচছেন তরুণীরা। দর্জিরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নতুন পোশাক তৈরি তে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। অনেকে নতুন অর্ডার নিচ্ছেন না। শহরের সৈয়দ আতর আলী রোড, করেজ রোড প্রভৃতি এলাকায় ফুটপাতে তোকান বসেছে। গভীর রাত পর্য়ন্ত চলছে বেচাকেনা ।
মনোহরগঞ্জ
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে মনোহরগঞ্জের দর্জি পাড়ার কারিগররা। আধুনিকতার সঙ্গে তালমিলিয়ে মনের মতো ডিজাইনের পোশাক বানাতে দর্জি পাড়ায় ভিড় করছে মানুষ। যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাঁদের। সেলাই মেশিনের খটখট শব্দ আর কারিগরদের সুই-সুতোর’ কাজ চলছে বিরামহীন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। রমজান মাসের শেষ সময় এসে কাজের চাপে নতুন করে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে টেইলার্স মালিকরা।
উপজেলার বিভিন্ন দর্জি পাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কাপড়ের দোকান থেকে পছন্দের সিট কাপড় কিনে দর্জির দোকানে ছুটছেন ক্রেতারা। এর মধ্যে নারী ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি। কাপড় সেলাইয়ের জন্য কেউ মাপ দিচ্ছেন, আবার কেউ সিরিয়াল পেতে দোকানের সামনে অপেক্ষা করছেন। এবারের ঈদে পাকিস্তানি ও ভারতীয় ডিজাইনে থ্রি-পিস তৈরির অর্ডার মিলেছে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া শার্ট প্যান্ট ও মেয়েদের বোরখা, শিশুদের পোশাকেরই অর্ডার আসছে জানালেন দর্জির কারিগররা। তবে ক্রেতারা অভিযোগ করেন এবার ঈদে মজুরি অনেক বেড়েছে।