ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১

জাদুকাটা তীরে পণতীর্থ গঙ্গাস্নান শুরু 

নিজস্ব সংবাদদাতা, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) 

প্রকাশিত: ১৪:২৬, ২৬ মার্চ ২০২৫

জাদুকাটা তীরে পণতীর্থ গঙ্গাস্নান শুরু 

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদী পাড়ে দুই দিনব্যাপী পণতীর্থ মহাবারুণী গঙ্গাস্নান আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিকট পুণ্যলাভে সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে পরিচিত। 

এবছর পণতীর্থ গঙ্গাস্নান ২৬ মার্চ বুধবার রাত ১১টা ১ মিনিট থেকে শুরু হয়ে চলবে ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত। প্রতিবছর গঙ্গাস্নান ও বারুণী মেলাকে ঘিরে যাদুকাটা নদী পাড়ে অন্তত কয়েক লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে।

একই সময়ে উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তে শাহ আরেফিন (র.) এর আস্তানায় ওরস ও মেলা বসার কথা থাকলেও এ বছর পবিত্র রমজান মাস ও শবে কদর থাকায় ওরস ও মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

এদিকে স্নান ও বারুনী মেলা ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানিয়েছেন, স্নান, মেলা ও তার আশপাশ এলাকা সিসি ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হবে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে।

ঐতিহাসিকদের মতে অতীতের পাপ মোচন, ঈশ্বরের আশীর্বাদ ও পুণ্য লাভের আশায় প্রতিবছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে কয়েক লাখ সনাতন ধর্মের অনুসারী নারী-পুরুষ শ্রী অদ্বৈত আচার্য ঠাকুরের আবির্ভাবস্থল পণতীর্থ স্মৃতিধাম যাদুকাটা নদীর জলে পুণ্যস্নান করে পাপমোচন এবং ঈশ্বরের কৃপা লাভ করেন। তাঁদের বিশ্বাস, পণতীর্থ স্নানের মাধ্যমে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে বারুণী মেলা বসে। ১৫১৬ খ্রিষ্টাব্দে এই তীর্থের সূচনা করেন মহাপুরুষ শ্রী অদ্বৈত আচার্য ঠাকুর। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে অদ্বৈত আচার্য মন্দির গড়ে উঠেছে যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী রাজারগাঁও গ্রামে। 

অন্যদিকে পণতীর্থ গঙ্গাস্নানের তারিখের সাথে মিল রেখে উপজেলার সীমান্তবর্তী লাউড়েরগড় এলাকায় শাহ আরেফিন (র.) এর বার্ষিক ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষে সেখানেও মেলা বসে। স্থানীয়দের ধারণা, হযরত শাহ আরেফিন এর মোকাম ভারত সীমান্তের ওপারে এক পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হলেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অগণিত মুসলমান নর-নারী ওরসে শরিক হন এবং দূর থেকেই এই দরবেশের মোকাম জিয়ারত করেন। ওরসে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়াও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান,পাহাড়ি ও বাঙালি ভক্ত-আশেকান শাহ আরেফিনের স্মৃতিবিজড়িত লাউড়েরগড় এলাকায় সমবেত হন।

রাজু

×