
ছবি:সংগৃহীত
২০২৪ সালের টাইম ম্যাগাজিনের "দ্য ওয়ার্ল্ড’স গ্রেটেস্ট প্লেসেস" তালিকায় স্থান পেয়েছে ঢাকার আশুলিয়ার জামগড়ার দরগারপাড় এলাকার জেবুন্নেসা মসজিদ। এই মসজিদটি তার অনন্য স্থাপত্য শৈলী এবং পরিবেশবান্ধব নকশার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসা অর্জন করেছে। আইডিএস গ্রুপের ফ্যাশন ফোরাম লিমিটেড কারখানার ভিতরে নির্মিত এই মসজিদটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আধুনিক স্থাপত্যের মেলবন্ধন হিসেবে পরিচিত।
জেবুন্নেসা মসজিদের স্থাপত্যে চতুর্ভুজ আকৃতির অবকাঠামোর মাঝে বিশাল একটি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের দেয়াল জুড়ে অসংখ্য ছিদ্র থাকায় প্রাকৃতিক আলো ও বাতাস প্রবেশ করে, যা মসজিদটিকে আরও সৌন্দর্যমণ্ডিত করে তুলেছে। মসজিদের সামনে রয়েছে কাঁচে ঘেরা একটি সরু লেক এবং বিশাল আকৃতির প্রাকৃতিক পুকুর। এই লেক ও পুকুরের পানির মাধ্যমে বাতাস প্রাকৃতিকভাবে শীতল হয়ে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে, যার ফলে মসজিদে এসি বা বৈদ্যুতিক পাখার প্রয়োজন হয় না।
মসজিদটি গোলাপি রঙের এবং এর অভিনব নকশা যেকোনো দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মসজিদের ভেতরের ও বাইরের পরিবেশ এতটাই মনোরম যে এটি এলাকার শ্রমিক, পথচারী ও মুসল্লিদের জন্য শান্তির কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মসজিদটি গরমের দিনে শীতল এবং শীতের দিনে উষ্ণ আবহাওয়া প্রদান করে, যা মুসল্লিদের জন্য আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে।
মসজিদটি সমতল থেকে কিছুটা উঁচুতে অবস্থিত এবং ভারী বর্ষণের সময় পানি যেন মসজিদে প্রবেশ না করে, সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মসজিদ নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ ও প্রযুক্তি সম্পূর্ণ দেশীয়, যা স্থাপত্যের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মসজিদের সামনে অবস্থিত পুকুর এবং লেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মসজিদটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
২০২৩ সালে আইডিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইদ্রিস ঠাকুর তার প্রয়াত মায়ের স্মৃতিতে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। ৬০৬০ বর্গফুট আয়তনের এই মসজিদে একসাথে প্রায় ৫০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদটির স্থাপত্য শৈলী এবং পরিবেশবান্ধব নকশা বিশ্বব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে, যা টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায় স্থান পাওয়ার মূল কারণ।
জেবুন্নেসা মসজিদটি শুধু একটি ধর্মীয় স্থানই নয়, বরং এটি স্থাপত্য শিল্পের একটি অনন্য নিদর্শন। এটি আশুলিয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং কারখানার শ্রমিকদের জন্য একটি শান্তির নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মসজিদটির সৌন্দর্য এবং পরিবেশবান্ধব নকশা যেকোনো দর্শনার্থীকে মুগ্ধ করে।
আঁখি