
ছবি: জনকণ্ঠ
কাছেই তেতুঁলিয়া নদী, পারে আচরে পরা ডেউয়ের সাথে বাতাসের শো-শো শদ্ধ। চোখ ফেরানো যায়না। এমন একটি মোন ভুলানো পরিবেশেই নির্মিত হয়েছে স্বপ্নচূড়া থিমপার্ক। গাঁয়ের মানুষের কাছে পার্কটি যেন স্বপ্নেরই মতো।
বাউফল শহর থেকে থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে কালাইয়া ইউনিয়নের কর্পূরকাঠি গ্রামের বগি বাজারের কাছে এই পার্কটির অবস্থান। সাড়ে ৩ একর জমির ওপর সবার জন্য বিনোদন, সবার জন্য সঠিক শিক্ষা এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মাসুদ হোসাইন নামের এক ব্যবসায়ি এই পার্কটি নির্মাণ করেন।
পার্কের মধ্যে রয়েছে সুমিং পুল, লেক, ঝর্ণা, ওভার ব্রীজ, দোলনা, স্লোপার, টং ঘর আর ফুল ও ফলের বাগান এবং বিভিন্ন ধরণের বন্য প্রানী। এ ছাড়াও রয়েছে দেশ বরণ্য ব্যক্তিদের ছবি। ঈদুল ফিতরের দিন এই পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়। কোন টাকা নেয়া হয়না।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সাড়ে তিন একর জমির উপর নির্মিত এই পার্কের মধ্য স্থানে রয়েছে সুইমিং পুল, ফোয়ারা, পাথরের জল ঝর্ণা। পূর্ব-দক্ষিণ পাশে রয়েছে ওভার ব্রীজ। ওভার ব্রীজ ওপর রয়েছে দুইট টং ঘর। তার দক্ষিণ পাশে রয়েছে শিশুদের জন্য দোলনা ও স্লোপার পার্কটির চার দিকই লেক বেস্টিত। লেকের পানিতে রাখা হয়েছে এক বৈঠার নৌকা।
দর্শনার্থী ইচ্ছে মতো ওই লেকে নৌকা নিয়ে আনন্দ করতে পারেন। রয়েছে বাহারি রঙ্গের ফুল, ফল ও কাঁশ বাগান। এ ছাড়াও লেকের পূর্ব পারে গেলে দেখা যাবে বানর, রাজ হাঁসসহ বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রানী। রাতের বর্ণিল আলোতে এই পার্কটির রুপ পাল্টে যায়। তখন এই পার্কটি এলাকাবাসীর কাছে স্বপ্নপূরি কিংবা কোন দূর দেশ মনে হয়। দর্শণার্থীরা পার্কটির যে কোন প্রান্তে গিয়ে রবীন্দ্র কিংবা নজরুলের গান শুনতে পারবেন। ডিজিট্যাল সাউন্ট সিস্টেম রয়েছে এখানে। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ হোসাইন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাইব্রেরিয়ান ইনফর্মেশন সাইন্সে এমএসএস করেন। এরপর তিনি ব্যাংককের ফ্যাসন-ডিজাইন এবং হোটেল ম্যানেজমেন্টের উপর ডিপ্লোমা করেন । বর্তমানে তিনি ব্যবসা করছেন। ব্যবসার কাজে বেশির ভাগ সময় তিনি দেশের বাইরে থাকেন। সময় পেলে তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় গল্প ও প্রবন্ধ লেখেন।
তার বাবা মরহুম এবিএম নূর হোসেন মিয়াও ছিলেন এলাকার একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক। মাসুদ হোসাইন জানান, এলাকার মানুষের বিনোদনের জন্য সামসুন নাহার বেবি নামে তার এক বন্ধুর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পেয়ে তিনি এই অজপাড়া গায়ে পার্কটি নির্মাণ করেন। পার্কটি আরও সম্প্রসারন ও দৃষ্টি নন্দন করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। পার্কটি ওপেন করার পর প্রায় ১০ হাজার দশর্নার্থী এখানে বেড়াতে এসেছেন। এই পার্ক থেকে উপার্জিত অর্থের ৩০ ভাগ শিশু শিক্ষা, নারীদৈর স্বাস্থ্য সেবাসহ মানবতার সেবায় ব্যয় করা হয়।
এই পর্কে রাতে থাকার জন্য একটি রেস্ট হাউস রয়েছে। খাবার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগা ব্যবস্থা ভালো থাকায় যে কোন স্থান থেকে সহজেই গাড়ি নিয়ে এই থিমপার্কে আসতে পারেন।
শহীদ