ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১

দখলদারদের সুবিধা দিতে লালমোহন পৌরসভার খাল খনন বন্ধের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমোহন (ভোলা):

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ২২ মার্চ ২০২৫

দখলদারদের সুবিধা দিতে লালমোহন পৌরসভার খাল খনন বন্ধের অভিযোগ

লালমোহন পৌরসভার ডাক বাংলো থেকে উত্তর পাশের খাল খননের চিত্র। বর্তমানে এখানে খননকাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।



ভোলার লালমোহনে খাল খননে নয়ছয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেভাবে খাল কাটার কথা সেভাবে খাল না কেটে কোনো রকমে দায়সারাভাবে কাজ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রভাবশালী। ও দখলদারদের সুবিধা দিতে লালমোহন পৌরসভার খাল খনন বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কোথাও নিয়ম অনুযায়ী খাল কাটা হলেও কোথাও প্রভাবশালীদের কারণে ঠিকমতো খাল কাটছেন না ঠিকাদার। সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হচ্ছে লালমোহন পৌরসভার প্রায় ১.৫ কিলোমিটারে। লালমোহন হাসপাতাল থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত খালটি কাটা শুরু করে এখন বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদার। অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালী অবৈধ দখলদারেরা খাল দখল করে ঘর নির্মাণ করার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। একটি চক্র এইসমস্ত দখলকারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা উত্তোলন করে ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত রয়েছেন।

এতে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খালকাটা পাড়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের আগে আমাদের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে খাল খনন করেছে। কিন্তু পৌরসভার ভিতরে হাসপাতাল থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত প্রভাবশালীদের দখলে থাকা খাল নিয়ম অনুযায়ী খনন করা হচ্ছে না। এখানে খাল কাটা শুরু হলে দখলকারীরা নিজেদের ঘরবাড়ি ভাঙা শুরু করে। ভেকু দিয়ে কোনোরকম নীচ দিয়ে কাটা শুরু করে হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই এই খাল কাটা বন্ধ করে দিয়ে ভেকু মেশিন উঠিয়ে নিয়ে যান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দখলকারীরা তাদের ঘরবাড়ি যেটুকু ভেঙ্গেছেন এখন আর ভাঙছেন না। গোপন সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী একটি মহল খাল পারের দখলকৃত ঘরবাড়ি না ভাঙার ব্যাপারে তদবির ও দখলদারদের সাথে অবৈধ লেনদেন করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আগে যে যেটুকু ভেঙেছেন এখন আর নতুন করেয দখলকৃত খালের উপর ঘরবাড়ি ভাঙছেন না। অনেকে অর্ধেক ভেঙে এখন অজ্ঞাত কারণে ভাঙা বন্দ রেখেছন। কেহ কেহ ভাঙা জায়গায় রাতের আধারে পূন:রায় মেরামত করে নিচ্ছেন।    

  
লালমোহন পানি উন্নয়ন উপ-বিভাগ (বাপাউবো) সূত্রে জানা যায়, লালমোহনে মোট ১৯ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। যার শুরু ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চরমোল্লাজী গ্রাম থেকে লালমোহন লঞ্চঘাট পর্যন্ত। খাল অনুযায়ী মুখে কোথাও ৬০ ফিট, কোথাও ৩৫ ফিট কাটার কথা। তবে লালমোহন পৌরসভার হাসপাতাল থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত মুখে ৬০ ফিট কাটার কথা। খাল খননের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাজুল।   ইসলাম। মোট বরাদ্দ ১৮ কোটি ৯৯ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৬০ টাকা। খনন শুরু জানুয়ারি ২০২৪ ইং শেষ এপ্রিল ২০২৫ ইং।


লালমোহন পৌরসভার হাসপাতাল থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত খাল কাটা শুরু করে  বন্ধ রাখার বিষয়ে কর্তব্যরত এসও প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ী খাল খনন করছি। হাসপাতাল থেকে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত খাল খনন শুরু হলে খাল পারের বাসিন্ধারা তাদের রেকর্ডিয় জমি দাবি করে লালমোহন  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদেরকেয সাময়িক সময়ের জন্য এখানে খনন বন্ধ রাখতে।য তিনি কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত দিবেন। তাই  চএখানের কাজ বন্ধ রেখে অন্য জায়গায় কাজ চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ব্যাপারে তিনি জানান মোট কাজের ৭০% সমাপ্ত হয়েছে।
পৌরসভার কাজ বন্ধের ব্যাপারে দায়িত্বরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার কার্তিক বাবু বলেন, মাটি নরমের কারণে উক্ত জায়গার খাল খনন বন্ধ রয়েছে। আমরা অন্য জায়গায় কাজ করছি। এখানকার মাটি শুকালে আবার কাটা হবে।


লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ আজিজ এ ব্যাপারে বলেন, খাল খনন বন্ধের বিষয়ে আমাকে অফিসিয়াল কোন কিছু জানানো হয়নি। আমি খাল খনন বন্ধের বিষয়ে কাউকে কিছু বলি নাই। খাল কাটার বিষয়ে কিছু অভিযোগ পেয়েছি সেগুলো বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণেরয জন্য আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডে ফরওয়ার্ড করে দিয়েছি। দ্রুত বর্ষার আগেই খান খনন করা উচিত বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।      


লালমোহন পানি উন্নয়ন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান জানান, পৌরসভার উক্ত এলাকায় রাফ কেটে গেছে এরপর ফাইনাল কাটা হবে। অবৈধ কোন স্থাপনা থাকলে উচ্ছেদ করা হবে।  
 

সাজিদ

×