
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক, বীরমুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মাস্টার (৭৩) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টা ৪০ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
১৯৭১ সালে সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দী ইউনিয়নে যে মুক্তিযোদ্ধা উপ-প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল সেখানে তিনি ক্যাম্প-ইন-চার্জের দায়িত্বে ছিলেন। পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে সোনারগাঁয়ের সংগঠিত প্রায় সকল সম্মুখ যুদ্ধে তিনি সরাসরি অস্ত্রহাতে অংশগ্রহণ করেন।
কর্ম জীবন শুরু করেন ১৯৭১ সালে বুরুমদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে। পরে আলমদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকার রায় সাহেব বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাঁচপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সর্বশেষ আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে ২০১১ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
তিনি তার এই কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনবার সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক 'সোনারগাঁও উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক' নির্বাচিত হন। এর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক 'নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক' হিসাবে ভূষিত হন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালে অবহেলিত এবং উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত সনমান্দী গ্রামকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গড়ে তোলেন সনমান্দী জুনিয়র হাই স্কুল। যা বর্তমানে সনমান্দী হাছান খান উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত। তিনি কর্মজীবনে শিক্ষকতার পাশাপাশি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকাস্থ সোনারগাঁও কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি, সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সনমান্দী হাফেজিয়া মাদ্রাসার সেক্রেটারি, সনমান্দী হাছান খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি, সনমান্দী বড় ঈদগাহ ময়দানের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সহকারী জেলা কমান্ডার (ত্রাণ এবং পুনর্বাসন) হিসাবে অত্যন্ত সুনাম এবং দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যক্তি জীবনে তিনি দুই পুত্র ও তিন কন্যাসন্তানের জনক। তার বড় ছেলে অধ্যাপক সেলিম হায়দার ফেনী সরকারি পরশুরাম কলেজে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
সজিব