ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

আগে পেরেক ঢুকিয়ে গাছ সুরক্ষায় পেরেক উত্তোলন কর্মসূচি পালন!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ২০ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২১:৫৮, ২০ মার্চ ২০২৫

আগে পেরেক ঢুকিয়ে গাছ সুরক্ষায় পেরেক উত্তোলন কর্মসূচি পালন!

ছবি: জনকণ্ঠ

"গাছ সুরক্ষায় পেরেক উত্তোলন"— এই শ্লোগান নিয়ে বাউফলে আয়োজন করা হয়েছিল পেরেক উত্তোলন দিবস। তবে বাস্তবে এই কর্মসূচি পরিণত হয়েছে তামাশায়। গাছ থেকে পেরেক উত্তোলনের নামে আগেই পেরেক ঢুকিয়ে, পরে তা তুলে ফটোসেশন করেই কার্যক্রম শেষ করা হয়।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজেই এই পেরেক উত্তোলন কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। তবে কার্যত গাছ থেকে পেরেক তোলার চেয়ে প্রতীকী ফটোসেশনই ছিল মূল উদ্দেশ্য। ফটোসেশন শেষে তিনি কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এরপর আর কোনো গাছ থেকেই পেরেক তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, যা নিয়ে সচেতন মহলে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে গাছ সুরক্ষার এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, বন কর্মকর্তা বদিউজ্জামান সোহাগসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা। তারা কিছুক্ষণ ব্যানার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, ফটোসেশন করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শেষ করেন।

ফটোসেশনের অংশ হিসেবে ইউএনও নিজেই একটি গাছের পেরেক তুলে দেখান, কিন্তু সেই পেরেক আগেই পরিকল্পিতভাবে গাছে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে! এরপর কর্মসূচির কেউই আর কোনো গাছ থেকে পেরেক তোলার উদ্যোগ নেননি।

স্থানীয় সাংবাদিকরা দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে দেখেন, সব গাছের গায়েই আগের মতোই পেরেক গেঁথে সাইনবোর্ড ঝোলানো রয়েছে। এতে কর্মসূচির প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন নাগরিকরা।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, গাছ সুরক্ষার নামে লোকদেখানো কর্মসূচি করেই ইউএনও চলে গেছেন। সচেতনতা তৈরির জন্য অন্তত একটি র‍্যালি বের করা উচিত ছিল। শহর প্রদক্ষিণ করলে মানুষ কিছুটা হলেও সচেতন হতো। কিন্তু ফটোসেশন করেই যদি দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়, তাহলে গাছের আসল উপকার কোথায়?

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উপজেলা বন কর্মকর্তা বদিউজ্জামান সোহাগ জানান, "যে ছেলেটিকে পেরেক উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সে বুঝতে পারেননি। পরিষদ এলাকায় গাছগাছালিতে পেরেক দিয়ে সাটানো সাইনবোর্ড খুব শিগগিরই উত্তোলন করা হবে।"

তবে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে গাছের সুরক্ষা নয়, এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল কেবলমাত্র ছবির জন্য লোকদেখানো প্রচার চালানো।

এম.কে.

×