
ছবি: লালমোহন হাসপাতাল
ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সামগ্রী, ষ্টেশনারী ও ধোলাই কাজের দরপত্রে নিয়ম রক্ষার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। মূলত দরপত্রটি নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে পেতে সহযোগিতা করেছেন খোদ স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডাঃ তৈয়বুর রহমান।
জানা যায়,অনেকটা গোপনীয়ভাবে এই দরপত্রের আহবান করা হয়। দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিটি দেখা যায়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নোটিশ বোর্ডে।মানা হয়নি পিপিএ ও পিপিআর নীতিমালা ।বহুল প্রচারিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার করা থাকলেও বিজ্ঞাপনটি দেয়া হয়েছে দুইটি লোকাল পত্রিকায়, তবে ওই দিনের প্রকাশিত পত্রিকাগুলো লালমোহনে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা তৈয়বুর রহমান জানান, নিয়ম অনুযায়ী দুইটি লোকাল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার দরকার নেই। কারণ বাইরের লোক এখানে দরপত্র কিনতে আসবে না।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দরপত্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নোটিশ বোর্ডে এবং উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে,ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা অফিস, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং অথবা ঢোল বাজিয়ে মানুষকে জানাতে হবে। তবে এধরণের কোন বিষয় জানা নেই বলে জানিয়েছেন ডা: তৈয়বুর রহমান।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় উপস্থিত সবার সামনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার রুমে দরপত্রের বাক্স খোলা হয়। বাক্স খোলার পর খামের উপর দরপত্র প্রদানকারীদের নাম পড়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসময় সাংবাদিকসহ উপস্থিত সকলকে বের করে দিয়ে বলেন, এখন শুধু অফিসের লোক আর কমিটির লোকজন থাকবে।
দরপত্র খোলার সময় শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে পুলিশের লোক থাকার কথা থাকলেও দেখা যায়নি কোন পুলিশ সদস্যদেরকে। পরে দেড়টার সময় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দরপত্র ফাইনাল না করে হাসপাতাল ছেড়ে তার প্রাইভেট চেম্বার ভোলার উদ্দেশ্যে চলে যান।
নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কর্মস্থলে থাকার কথা থাকলেও ডাঃ তৈয়বুর রহমান যোগদান করার পর বিভিন্ন অযুহাতে একদিনের জন্য লালমোহনে থাকেনি। ভোলা সদর থেকে তিনি যাতায়াত করেন। এতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন লালমোহনবাসী।
খাদ্য সামগ্রী, ষ্টেশনারী ও ধোলাই কাজের কে দরপত্র পেয়েছে তা কেহ জানেন না। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় আগামী শনিবার টেন্ডার ফাইনাল করা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা যায়, ৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ১২ টি সিডিউল বিক্রি হয়, খাদ্য ৩টি, ষ্টেশনারী ৫টি এবং ধোলাই ৪টি এর মধ্যে সবগুলো জমা হয়।
জানা গেছে, নির্দিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিগত বছরেও একই প্রক্রিয়ায় উক্ত টেন্ডার নিজের পছন্দের লোকদের পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন এই কর্মকর্তা। এই বছর ও একই অনিয়ম করলেন তিনি।
ভোলা জেলার সিভিলে সার্জন ডাঃ মনিরুল ইসলামের সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি জানান, টেন্ডারের নোটিশ অবশ্যই নোটিশ বোর্ডে টানানো থাকবে। দরপত্র খোলার সময় পুলিশ থাকবে এবং দরপত্র যাচাই বাছাইয়ের সময় সাংবাদিকগণ থাকতে পারবেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কর্মস্থলে সরকারি আবাসিক ভবনে থাকবেন। যদি সরকারি আবাসিক ভবনে সমস্যা থাকে তাহলে কর্মস্থলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবেন।
শিলা ইসলাম