
ছবি:সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্য নিয়ে আসে দেশি-বিদেশি জাহাজ। বছরে প্রায় ৯ থেকে ১২ কোটি টন পণ্য এখানে খালাস করা হয়। এরপর ছোট ছোট লাইটার জাহাজে করে এসব পণ্য সারাদেশে পাঠানো হয়। এ কাজে প্রায় ১,৮০০ লাইটার জাহাজ নিয়োজিত রয়েছে। তবে এবারের রমজানে গত বছরের তুলনায় বেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি হওয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লাইটার জাহাজকে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে পণ্য মজুদ করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এতে বাজারে পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে এবং দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে যৌথ অভিযান চালায় নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। অভিযানে তিনটি জাহাজে করে প্রায় ৮ থেকে ১০টি লাইটার জাহাজের পণ্য ও কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, লাইটার জাহাজে অবৈধভাবে পণ্য মজুদ করলে বাজারে সরবরাহে ঘাটতি পড়ে এবং লাইটার জাহাজের সংকট তৈরি হয়। এতে বড় জাহাজগুলো সময়মতো পণ্য খালাস করতে পারে না।
কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী, লাইটার জাহাজগুলোকে পণ্য বোঝাই করার ৭২ ঘন্টার মধ্যে বন্দর সীমা ত্যাগ করতে হয়। তবে এই নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানকালে বেশ কয়েকটি লাইটার জাহাজের কাগজপত্র আপ টু ডেট নেই বলে ধরা পড়ে। এছাড়া, কিছু জাহাজের লাইসেন্স, ফিটনেস ও অগ্নিনিরাপত্তা সংক্রান্ত ত্রুটিও পাওয়া যায়।
বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট থাকায় অভিযানকারী দল বেশ কয়েকটি তেলবাহী জাহাজ পরিদর্শন করে। তবে অবৈধভাবে পণ্য মজুদের পরিমাণ আগের তুলনায় কমেছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। তারা জানান, লাইটার জাহাজগুলোকে ভাসমান গুদাম হিসেবে ব্যবহার করে সয়াবিন তেল মজুদ করে বাজারে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। তবে এবারের অভিযানে এমন কোনো লাইটার জাহাজ পাওয়া যায়নি, যা পণ্য মজুদ করে রেখেছে।
কর্তৃপক্ষের দেওয়া সার্কুলার এবং ক্রমাগত অভিযানের ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে জানানো হয়। রমজানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি জাহাজে অভিযান চালানো হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি জাহাজকে জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা অবৈধ পণ্য মজুদ বন্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখবেন এবং বাজারে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এই অভিযানের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ বাজারে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের কার্যকলাপ রোধে সচেষ্ট রয়েছে।
আঁখি