
ছবি: সংগৃহীত
পটুয়াখালীতে জুলাই বিপ্লবে নিহত এক শহীদের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় সাকিব মুন্সি (১৯) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া যুবক দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রয়াত সভাপতি মামুন মুন্সির ছেলে।
গতকাল বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ভিকটিম দুমকি থানায় হাজির হয়ে নিজে এমন অভিযোগ করেছেন। ভিকটিম দুমকি সরকারি জনতা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। ওইদিন ভিকটিম দুপুরে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিলেও দীর্ঘ নাটকীয়তার পরে মামলা নেয়া হয় রাতে। ততক্ষণ ভিকটিমকে হাসপাতালে না নিয়ে থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ধর্ষণের শিকার ভিকটিম গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত জসীম উদ্দিনের মেয়ে। তাঁর বাড়ী পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামে।
ঘটনার বরাত দিয়ে ভিকটিমের মা রুমা বেগম বলেন, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর স্বামীর কবর জিয়ারত করে নানা বাড়ীতে ফিরছিল। নানা বাড়িতে ফেরার পথে একই ইউনিয়নের আলগী গ্রামের মুন্সিবাড়ির কাছে পৌঁছলে স্থানীয় মৃত মামুন মুন্সীর ছেলে সাকিব মুন্সী (১৯) ও সোহাগ মুন্সীর ছেলে সিফাত মুন্সী (২০)তাঁর মেয়ের হাত পা চেপে ধরে সড়কের পাশের একটি নির্জন বাগানে নিয়ে যায়। এরপর তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করে তাঁরা। এসময় ওই দুই যুবক ধর্ষণের ভিডিও তাদের মোবাইলে ধারণ করে মুখ বন্ধ রাখতে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
রুমা বেগম আরো বলেন, এই ঘটনার পর বাড়ীতে ফিরে তাঁর মেয়ে এক কলেজ সহপাঠিকে জানান। পরে ওই কলেজ সহপাঠি বিষয়টি আমাকে মুঠো ফোনে অবহিত করেন।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত জাতীয় নাগরিক কমিটির পটুয়াখালী জেলা শাখার সদস্য মো.আফজাল হোসেন বলেন, মেয়েটির মা ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। বর্তমানে মেয়েটির কাছে কোন আত্মীয়-স্বজন না থাকায় তিনি দেখভালের জন্য হাসপাতালে অবস্থান করছেন।
নাগরিক কমিটির সদস্য মো.আফজাল হোসেন ঘটনার বরাত দিয়ে বলেন, বুধবার দুপুর ১২টায় ভিকটিম নিজে দুমকি থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশকে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ সন্ধ্যায় পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
দুমকি উপজেলার কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী বলেন, ভিকিটিম দুপুরে থানায় উপস্থিত হওয়ার পর তাঁকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়। এরপর তাঁরা পটুয়াখালী পুলিশ সুপারকে মুঠোফোনে জানালে পুলিশ সুপার ওসিকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বললে ওসি সন্ধ্যার পরে ভিকিটিমকে মেডিকেল পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা নেন। এর আগে প্রায় ৬ ঘন্টা থানায় বসিয়ে রাখেন।
এ প্রসঙ্গে দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘ভিকটিম দুপুরে থানায় আসলেও সে কোন তথ্য দিতে পারেনি। তাই তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশনে যাই। এরপর মামলা রজু করে একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরন করি। এসব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ভিকটিমকে মেডিকেল পরীক্ষা করাতে একটু বিলম্ব হয়েছে’।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ভিকটিমকে উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে আছেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আসিফ