ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

শত্রুর দেওয়া বিষে লাখ টাকার মাছ হারিয়ে সর্বস্বান্ত মাছ চাষী

প্রকাশিত: ১২:০১, ১৯ মার্চ ২০২৫

শত্রুর দেওয়া বিষে লাখ টাকার মাছ হারিয়ে সর্বস্বান্ত মাছ চাষী

ছবি:সংগৃহীত

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া কৈলাটি গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে লাখ লাখ মাছ মেরে ফেলার ঘটনায় মাথায় হাত পড়েছে ভুক্তভোগী মাছ চাষী আতাউর রহমান তালুকদারের। গত ১৭ মার্চ দিবাগত রাতে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করা হয়, যার ফলে তার পাঁচটি পুকুরের প্রায় ৭ লক্ষ ১০ হাজার শিং মাছের পোনা মারা যায়। এ নিয়ে অর্ধকোটি টাকারও বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।  

 

 

 

আতাউর রহমান তালুকদার জানান, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ২০০ শতক জমিতে ১২ বছর ধরে তিনি মাছ চাষ করছেন। এবার রমজান শেষেই পুকুর থেকে মাছ তোলার কথা ছিল। কিন্তু গত ১৭ মার্চ রাতে পুকুরে গিয়ে তিনি দেখেন, লক্ষ লক্ষ মাছ ভেসে উঠেছে এবং অনেক মাছ তীরে এসে ছটফট করছে। তিনি বলেন, "আমি তাড়াতাড়ি লেবারদের ফোন দিই। তারা এসে মরা মাছ তুলে বাগানে পুঁতে ফেলে। এখনও হাজার হাজার মাছ মরে ভেসে উঠছে। আমার প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার মাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আমি এখন পথের ভিখারী।"  

গ্রামবাসী ও স্থানীয়রা জানান, আতাউর রহমান ছাড়াও তার খামারের উপর নির্ভর করে বেশ কয়েকজন শ্রমিকের সংসার চলে। এই ঘটনায় তারাও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। একজন শ্রমিক বলেন, "আমরা সারারাত কষ্ট করে মাছ চাষ করেছি। এখন মালিক আমাদের বেতন দিতে পারবেন না। আমরা কিভাবে সংসার চালাব?"  

 

 

আতাউর রহমানের ছেলে বলেন, "আমার বাবার এত টাকা পুঁজি ছিল মাছ চাষে। এখন সব শেষ। এই সংসার কিভাবে চলবে? এটা আমাদের জন্য আত্মহত্যার সমতুল্য।"  

স্থানীয়রা জানান, পুকুরে বিষ প্রয়োগের পেছনে পূর্ব শত্রুতার কারণ রয়েছে। তারা দাবি করেন, গ্যাসের ট্যাবলেট ব্যবহার করে পুকুরে বিষ দেওয়া হয়েছে। একজন গ্রামবাসী বলেন, "আমরা গ্যাসের গন্ধ পেয়েছি। এটা পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।"  

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী আতাউর রহমান সরকার ও মিডিয়ার কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমি একজন সাধারণ কৃষক। দিনরাত পরিশ্রম করে মাছ চাষ করেছি। ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি, দোকানে টাকা বাকি দিয়েছি। এখন কিভাবে এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠব? সরকারের কাছে আমার আবেদন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।"

 

 

 

গ্রামবাসীরাও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, "এই ধরনের অমানবিক ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।"  

এই ঘটনায় মাছ চাষী ও তার পরিবার এখন চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারি সহায়তা ও তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।

আঁখি

×