
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লার চান্দিনায় এক এনজিওর দুই কর্মীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন, শারীরিক ও যৌন হয়রানি এবং মোবাইলে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। একদল দুর্বৃত্ত পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও বৈদ্যুতিক শক দেয় এবং নারী কর্মীকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চান্দিনা পৌরসভার তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দীঘির পাড়ের নির্জন বাগানে এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার ভুক্তভোগী পুরুষ কর্মী তারেক রহমান চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এনজিওর চান্দিনা শাখার এক পুরুষ ও এক নারী কর্মী তুলাতলী গ্রামে ঋণের কিস্তি আদায়ে গিয়ে সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়। ফেরার পথে একদল যুবক তাদের আটক করে তুলাতলী গ্রামের শেষপ্রান্তে একটি মৎস্য প্রজেক্টের পাড়ে নিয়ে যায় এবং কিস্তির টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় স্থানীয় এক ব্যক্তি রুহুল আমিন ঘটনাটি দেখে ফেলায় দুর্বৃত্তরা তাদের হাত ও চোখ বেঁধে তুলাতলী দক্ষিণপাড়ার দীঘির পাড়ের নির্জন বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয় এবং নারী কর্মীকে নগ্ন করে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তারা দুই লাখ টাকা দাবি করে।
ভয় পেয়ে নির্যাতনের শিকার নারী তার বোনকে ফোন করে এবং নির্যাতনকারীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠায়। তবে টাকা পাওয়ার পরও তারা নির্যাতন চালিয়ে যায়। একপর্যায়ে গ্রামের লোকজন টের পেয়ে ডাকাত সন্দেহে তাদের ধাওয়া করলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসীরা দুই এনজিও কর্মীকে উদ্ধার করে এবং পুলিশকে খবর দেয়।
ভুক্তভোগী এনজিও কর্মী তারেক রহমান বলেন, "আমরা কিস্তির টাকা আদায় শেষে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের কবলে পড়ি। আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর ও বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়, আর নারী সহকর্মীকে নগ্ন করে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হয়। পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তারা দুই লাখ টাকা দাবি করে। বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠালেও তারা নির্যাতন চালিয়ে যায়। পরে গ্রামবাসীরা আমাদের উদ্ধার করে।"
চান্দিনা থানার ওসি নাজমুল হুদা জানান, "ভুক্তভোগীদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে থানায় এনে বিস্তারিত শুনে মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।"
এম.কে.