ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

টাকা আদায়ের অভিযোগ, সাদা পোশাকে অভিযানে গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ 

অঙ্গন সাহা, সাভার।

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ১৯ মার্চ ২০২৫

টাকা আদায়ের অভিযোগ, সাদা পোশাকে অভিযানে গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ 

ছবিঃ সংগৃহীত

সাভারে সাদা পোশাকে অভিযানে যাওয়ায় পুলিশের একটি টিমকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল এলাকাবাসী। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি মটরসাইকেল ভাংচুর করার ঘটনা ঘটেছে। 
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বেলা বারোটার দিকে সাভার মডেল থানাধীন রাজ ফুলবাড়িয়ার শোভাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সাভারের ওই এলাকায় নাসির উদ্দিনের বাড়িতে অন্তত ৪০টির উপরে কক্ষে ব্যাচেলর ভাড়া থাকেন। বাড়িটি থেকে এর আগে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে একাধীকবার কয়েকজন ভাড়াটিয়া যুবককে তুলে নিয়ে মারধর করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনার পর বাড়িটির ভাড়াটিয়া ও প্রতিবেশিরা সিদ্ধান্ত নেয় পরবর্তীতে পুলিশ পরিচয়ে বাড়িতে ঢুকলে তাদের তাদের আইডি কার্ড ও প্রকৃত পরিচয় ছাড়া কাউকে তুলে নিতে দেয়া হবে না। 


এদিন দুপুরে সাংবাদিক ও সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে ফের ওই বাড়িতে আট থেকে নয়জন ব্যক্তি প্রবেশ করে। এসময় ভাড়াটিয়া ও প্রতিবেশিরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা গড়িমসি করলে তাদেরকে মারধর ও মটরসাইকেল ভাংচুর করে উত্তেজিত জনতা। পরে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। 


বাড়িটির মালিক নাসির উদ্দিননের ছেলে নাহিদ হাসান বলেন, এর আগে দুইবার কয়েকজন ভাড়াটিয়াকে সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে মারধর করে মোট ৯৫ হাজার টাকা আদায় করে ছেড়ে দেয়। ওই ঘটনায় মারধরের শিকার আকিব নামে এক ভাড়াটিয়া সাভার মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।

পরবর্তীতে আমরা ভাড়াটিয়াদের বলে দেই সাদা পুলিশ পরিচয়ে যদি কেউ কোনো ভাড়াটিয়াকে তুলে নিতে আসে তাদের প্রকৃত পরিচয় জানা ছাড়া যেতে দিও না। দুপুরে সাদা পোশাকে পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয়ে আমাদের ওই বাড়িতে ডুকে ভাড়াটিয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে যায়। ভাড়াটিয়ারা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে পরিচয় দিতে গরিমসি করে এবং সাংবাদিকরা পরিচয় দেয়না।

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার এসআই মেহেদী হাসান বলেন, জুলাই আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলার এক আসামি  আওয়ামী লীগ নেতা ওই বাড়িতে অবস্থান করছে। এমন খবরের ভিত্তিতে আমি ও দুইজন এএসআই ওই বাড়িতে যাই। সেসময় আমাদের সঙ্গে কয়েকজন সাংবাদিক ছিলো। সেখানে গিয়ে দেখি আসামির পরিচয় ও ছবির সাথে ওই ব্যক্তির মিল নেই। এর মধ্যেই বাড়ির ভাড়াটিয়ারা হট্টগোল শুরু করেন এবং লোকজন জড়ো করেন। আমাদের পরিচয় জানতে চান আমরা সাদা পোশাকে থাকলেও আমাদের সাথে পরিচয়পত্র ( পুলিশ আইডি), ওয়াকিটকি,ও পিস্তল ছিলো। আমরা পুলিশ সদস্যরা পুলিশ আইডি দেখাই। উত্তেজিত জনতা তারপরও আমার মটরসাইকেল ভাংচুর করে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে সেখানে গিয়েছিলাম।


এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুয়েল মিয়া বলেন, পুলিশ এ্যাসল্টের কোন ঘটনা নেই। পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে কি না বিষয়টি জানতে নাসির উদ্দিন নামে একজনকে থানায় আনা হয়েছে। এরকম ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। থানা পুলিশের সাদা পোশাকে অভিযানের নিয়ম আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের যদি কোন গাফলতি থাকে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রিফাত

×