
ছবি: জনকণ্ঠ
শ্রমজীবী ভ্যানচালক স্বামী ও সন্তান নিয়ে সরকারি আবাসনে ঠাঁই পেয়েছিলেন আয়শা। দীর্ঘদিন পর সন্তানসহ একটি স্থায়ী ঠিকানা পেয়েছিলেন, কিন্তু সেটিও হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। বর্তমানে তারা উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি আবাসনে আশ্রিত সাতটি দরিদ্র পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি লালন মোল্লা ও তার পরিবারের সদস্যরা হামলা চালিয়ে তাদের বসতবাড়ি তছনছ করেছেন। রান্নার চুলা পর্যন্ত ভেঙে ফেলা হয়েছে, বেড়া উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং চলাচলের পথ আটকে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত থাকার পর আয়শাসহ সাতটি ভূমিহীন পরিবার সরকারি প্রকল্পের আওতায় এই আবাসনে ঠাঁই পেয়েছিলেন। প্রায় আড়াই বছর আগে সরকার তাদের সেমিপাকা ঘর ও দুই শতক খাস জমির দলিল বুঝিয়ে দেয়। জমির মালিকানার খতিয়ানও খুলে দেওয়া হয়, যেখানে আয়শার খতিয়ান নম্বর ৫৬৮।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই লালন মোল্লা তাদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ইতোমধ্যে তার ভয়ে তিনটি পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। বর্তমানে বাকি পরিবারগুলোও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তারা জানান, গত তিন দিন ধরে হামলা, গালাগালি ও ভয়ভীতির শিকার হচ্ছেন।
এই অন্যায়ের প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীরা কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এমনকি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেও কোনো কার্যকর সমাধান পাননি।
অভিযুক্ত লালন মোল্লা অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, "সাতটি পরিবারকে ১৪ শতাংশ জায়গা দেওয়ার পরও আমার রেকর্ডীয় জমি টিএনও আওয়ামী লীগ আমলে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমার জায়গায় চুলা ছিল, তাই ভেঙেছি। এই জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।"
এ বিষয়ে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান শহীদ মাতুব্বর জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু ফয়সালা করতে না পারলে প্রশাসন পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
এম.কে.