
ছবি: প্রতীকী
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ক্ষেতলাল থানায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে থানায় হামলা চালানো হয়। দায়িত্বরত দুই পুলিশ সদস্য বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয় এবং থানা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭) ও আব্দুল মমিন (৩৮)। এছাড়া আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন কাজী জাফর ও সুমন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকও আহত হন।
ভুক্তভোগী রফিক জানান, তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য ক্ষেতলাল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে স্থানীয় পৌর বিএনপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি কর্মী মাসুদ চৌধুরী, গোলাম মওলা ও জুয়েল তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে বিষয়টি জানান। পরে পার্থ ঘটনাস্থলে এসে হুমকি দেন যে চাঁদা না দিলে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না। বাধা দিতে গেলে তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারধর করে রক্তাক্ত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে গুরুতর আহত তোফাজ্জলকে ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এরপর পুলিশ হেফাজতে থাকা তিনজনকে ছিনিয়ে নিতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন থানায় হামলা চালায়। তারা দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করে থানাকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাইলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ তিনজনকে আটক করে।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য থানায় অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, দলের যে কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে এবং পুলিশ সদস্যদের মারধরের ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তিনি জানান, অভিযানের মাধ্যমে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
এম.কে.