
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে দৃষ্টিনন্দন আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ
এক একর জমির ওপর নির্মিত তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদ। মসজিদটির মাঝখানে রয়েছে একটি বিশাল আকৃতির গম্বুজ আর দুইপাশে রয়েছে একশ’ ১০ ফুট উচ্চতার দুইটি বড় মিনার। সেইসঙ্গে ছোট ছোট আরও ৮টি গম্বুজ। মসজিদে একসঙ্গে কমবেশি পাঁচ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। প্রচ- গরমেও মসজিদের ভেতরে ঠান্ডা অনুভূত হয়।
আধুনিক নির্মাণশৈলীর এই মসজিদটি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় নির্মিত। এই মসজিদেও সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি নামাজ আদায় করে আত্মার প্রশান্তির জন্য দূর-বহুদূর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আসেন। সেইসঙ্গে ভিন্ন ধর্মের লোকজনও আসেন মসজিদের নির্মাণশৈলী দেখার জন্য।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ সৌন্দর্যের দিক বিবেচনায় বাংলাদেশের তৃতীয় স্থানে। আধুনিক নির্মাণশৈলী আর দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যময় মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন দেশ থেকে আনা মার্বেল পাথর, টাইল্স ও ঝাড়বাতি। নির্মাণ শিল্পে ভিন্নতা এনে শীতাতপ যন্ত্র ব্যবহার না করেও ভবন শীতল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এক একর জমির ওপর নির্মিত ৩ তলা বিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে প্রায় ৯ বছর। মসজিদটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও নামাজ আদায় করতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছে নানা বয়সী মানুষ। পবিত্র রমজান উপলক্ষে মুসল্লিদের জন্য ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করা হয়েছে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে।
দেশী-বিদেশী কারিগরের আধুনিক নির্মাণশৈলীতে গড়ে তোলা হয় দৃষ্টিনন্দন আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ। আধুনিক নির্মাণশৈলী আর কারুকার্যময় মসজিদটি নির্মাণে ভারত, ইতালি ও তুরস্ক থেকে আনা হয়েছে মার্বেল ও গ্রানাইড পাথর। এ ছাড়াও মসজিদের ভেতরে লাগানো নজরকাড়া ঝাড়বাতিগুলো চীন থেকে আনা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ব্যবসায়ী মরহুম মোহাম্মদ আলী সরকার ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১২ সালে বেলকুচি পৌর ভবনের পাশে এক একর জমির ওপর তার ছেলে আল-আমান ও মা বাহেলা খাতুনের নামে আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু ২০২১ সালে মসজিদটি উদ্বোধনের আগেই তিনি মৃতু্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে তাঁর ছেলেরা এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন।
২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের ২ তারিখে জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে এটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকেই মসজিদটি সকলের নজর কাড়ে। মসজিদটির মাঝখানে রয়েছে একটি বিশাল আকৃতির গম্বুজ আর দুইপাশে রয়েছে ১শ ১০ ফিট উচ্চতার দুইটি বড় মিনার। সেইসঙ্গে ছোট ছোট আরও ৮টি গম্বুজ। প্রচ- গরমেও মসজিদের ভেতরে ঠান্ডা অনুভব হয়।
মসজিদটিতে মুসল্লিদের ওজু করার জন্য রয়েছে দুইটি আধুনিক ওজুখানা। মসজিদটি দেখতে ও এখানে নামাজ আদায় করতে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা বয়সের মানুষ আসে এখানে। দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি এক নজর দেখে ও এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে আত্মতৃপ্তির কথা জানায় মুসল্লিরা।
আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ আনিস রেজা জানান, আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ সৌন্দর্যের দিক দিয়ে বাংলাদেশের তৃতীয়। পবিত্র রমজান উপলক্ষে মসজিদে আগত মুসল্লিদের জন্য ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে।
আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদের ইমাম মওলানা গোলাম কিবরিয়া জানান, এই মসজিদে একসঙ্গে চার হাজার ৬শ’ জনের স্থান নির্ধারণ করা হলেও কমবেশি পাঁচ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করা সম্ভব। প্রতিদিন ওয়াক্তিয়া নামাজে এক হাজারেরও বেশি মানুষ এসে নামাজ আদায় করেন। ইমামতি করার সুযোগ পেয়ে আমার নিজেরও অনেক ভালো লাগে, আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করি। তবে অন্তরের মধ্যে সৃষ্ট এ অনুভূতি প্রকাশ করার মতো ভাষা আমার জানা নেই।