ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

নওগাঁয় কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়েছে চালের দাম

রিজভী আহম্মেদ রিজোয়ান, নওগাঁ।

প্রকাশিত: ২০:০৪, ১৮ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২০:১০, ১৮ মার্চ ২০২৫

নওগাঁয় কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়েছে চালের দাম

দেশের অন্যতম শীর্ষ ধান-চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁয় বেড়েছে চালের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি সরু চালে বেড়েছে ২-৪ টাকা।পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও বেড়েছে চালের দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালে প্রকারভেদে বেড়েছে ১-৩ টাকা। এদিকে গত দেড় মাস ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে মোটা জাতের চালের দাম। রমজান মাসে চালের দাম বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নিম্ন মধ্যম আয়ের মানুষদের। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরু চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল (জিরা) ও কাটারিভোগ (কাটারি) ধানের আমদানি বর্তমানে বাজারে নেই বললেই চলে। চাহিদার তুলনায় যে সামান্য ধান আমদানি হচ্ছে, তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। স্থানীয় বাজারে দুই থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধানের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ধানের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চালের দামও বেড়েছে।

নওগাঁ শহরের আড়তদারপট্টির পাইকারি চাল বাজরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ২-৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে জিরাশাইল ৭৮-৮০ টাকা এবং কাটারিভোগ ৮২-৮৩ টাকা দরে বিক্রি করছেন মিল মালিক ও আড়তদাররা। অপরিবর্তিত রয়েছে মোটা চাল বলে পরিচিত স্বর্ণা-৫ জাতের চালের দাম। প্রতি কেজি স্বর্ণা-৫ জাতে চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৩ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই মোকামে মানভেদে প্রতি কেজি জিরাশাইল ৭৫-৭৬ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭৯-৮০ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল।

অপরদিকে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫৪-৫৫ টাকা, জিরাশাইল ৮০-৮২ টাকা এবং কাটারিভোগ ৮৪-৮৬ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা-৫ জাতের চাল ৫২-৫৩ টাকা, জিরাশাইল ৭৮-৮০ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭৯-৮২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭২ টাকা কেজি দরে। এই চালের বাজারদর এক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। 

নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী তাপস খাদ্য ভান্ডারের প্রোপাইটার শ্রী তাপশ কুমার মন্ডল বলেন, জিরা এবং কাটারি চালের (৫০কেজি) বস্তা বর্তমানে ১০০-১৫০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার কারনে খুচরা বাজারেও দাম কিছুটা বেশি। খুচরা বাজারে দাম বাড়ায় বেচাকিনা একদম নেই। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ২ হাজার টাকারও বিক্রি হয়নি। এলসি না থাকলে এসব চালের দাম আরও বেশি হতো। 

নওগাঁ শহরের আড়তদারপট্টির পাইকারি চাল ব্যাবসায়ী মেসার্স সততা রাইস এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী সুকুমার ব্রহ্ম বলেন,রোজার কারনে মানুষ মোটা চাল খাচ্ছে না। সরু বা চিকন চালগুলোই বেশি কিনতেছে। যার কারনে এই চাল গুলোর চাহিদা একটু বেশি। এখন মৌসুমের শেষ সময় চলতেছে, বাজারে তেমন ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এই কারনে সরু প্রতি কেজি চালে ২-৪ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন ধান আসলে আবারও চালের দাম কমে আসবে। 

নওগাঁ জেলা চাল কল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, দেশীয় উৎপাদিত জিরা এবং কাটারি ধান বাজারে তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারনে এই দুটি চালের দাম একটু বেশি। এছাড়া স্বর্ণা-৫ জাতের চালের দাম দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। স্বর্ণা-৫ বাজারে তেমন বিক্রিও হচ্ছে না। মৌসুমের নতুন ধানের ফলন ভালো হলে চালের দাম কমে আসবে। নতুন ধান না আসা পর্যন্ত দেড়-দুই মাস জিরা এবং কাটারি চালের দাম এইরকম ই থাকতে পারে। এলসির মাধ্যমে আনা চাল গুলোর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। 

নুসরাত

×