
ঝালকাঠিতে সোমবার প্রেস ক্লাবের সামনে পথসভায় বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জায়ায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির আমির ডাক্তার শফিকুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের খুনিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, আমরা কোন অন্যায় বিচার চাই না। প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে প্রতিশ্রুত ৩০ লাখ টাকা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্যও তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। কুরআন বাংলাদেশের সংবিধান হলে এবং ইসলামী দলগুলো দেশের সেবা করতে পারলে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবে।
সোমবার বেলা ১২টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের পথসভায় এ কথা বলেন। জেলা আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বরিশাল বিভাগের জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাডভোকেট মোয়জ্জেম হোসেন আলাল, অধ্যাপক আব্দুল জব্বার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলামসহ জেলা উপজেলা পর্যায়ের নেতারা ব্যক্তব্য রাখেন।
এরপরে সেখান থেকে দুপুরে ঝালকাঠির কবিরাজ বাড়ি এলাকায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া সেলিম তালুকদারের নবজাতক কন্যাকে দেখতে যান এবং শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই শিশুর লেখাপড়া থেকে সকল ধরনের দায়িত্ব নেন এই শিশুটির নাম রাখা হয়েছিল রোজা এবং এই নেতা জামায়াতের আমির ঘোষণা করেন মেয়েটির নাম রাখা হবে সাইমা সেলিম ।
এর আগে স্থানীয় প্রেসক্লাব মোড়ে সংক্ষিপ্ত পথসভায় বক্তব্যকালে জামায়াতের আমির বলেন, কুরআন বাংলাদেশের সংবিধান হলে এবং ইসলামি দলগুলো দেশের সেবা করতে পারলে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবে। জেলা জায়ামাতের আমির হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্টুর শোকাহত পরিবারে পাশে জামায়াত আমির ॥ বরগুনায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার পর আলোচিত মন্টু চন্দ্র দাশ হত্যার ঘটনায় শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান। সোমবার সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে পৌঁছেন তিনি। এরপর ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করে মন্টু চন্দ্রের স্ত্রীর সঙ্গে তাদের দৈনন্দিন দুঃখ-কষ্টের কথা শোনেন।
বরগুনা পৌরশহরের কালিবাড়ী কড়ইতলা নামক এলাকায় নিহত মন্টু দাস ও ধর্ষিতা শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি নিহত পরিবারকে বিভিন্ন রকমের ফল ও ঈদ সামগ্রীসহ নগদ টাকা প্রদান করেন। নিহত মন্টু দাসের দেড় মাসের ছোট শিশু কন্যাটিকে কোলে নিয়ে তিনি বলেন, এই কন্যা শিশুটির বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সকল ধরনের ভরণ পোষণের ব্যবস্থা আমরা করব এবং আপনাদের সব রকম সহযোগিতা করার জন্য আমরা আপনাদের পাশে থাকব।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টরযোগে বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে নেমে নিহত মন্টু দাস ও ধর্ষিতা নন্দিনী দাসের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান। পরে বরগুনা শহীদ মিনার চত্ব¡রে বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর আমিরে শুভাগমন উপলক্ষে পথসভায় তিনি বলেন, বরগুনার আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও তার বাবাকে হত্যার এ ঘটনায় মামলার রায় ৯০ দিনের মধ্যে কাযকর করতে হবে। কিন্তু সতর্ক করে দিতে চাই, এটা ৯১ দিন হলে আমরা মানব না।
বরগুনা ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবাকে হারানো শিশুটির পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
এ সময় তিনি তাদের মেয়েদের লেখাপড়া এবং সংসারের অন্যান্য খরচ সংকলনের জন্য কিছু সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এ জন্য মন্টুর স্ত্রী শিখা রানী দাশকে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দেন।
এ সময় ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সফর করেন ডা. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হোসেন হেলালসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তিনি বেলা ১২টার পর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার আমির মো. মহিবুল্লাহ হারুনসহ জেলা জামায়াতে ইসলামীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য ১১ মার্চ রাতে বরগুনা পৌর শহরের কালিবাড়ী স্টাফ কোয়ার্টার দীঘির দক্ষিণ পাশে ঝোপঝাড় থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মন্টু চন্দ্র বরগুনা বাজারের একটি মুরগির দোকানে কর্মচারী ছিলেন। তার পরিবারে দেড় মাসের এক কন্যা শিশু, চার বছরের এবং ১২ বছরের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।
মন্টুর পরিবারের দাবি, তার মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগ এনে মন্টু বরগুনা থানায় মামলা করার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মন্টুর স্ত্রী আরেকটি মামলা করেছেন। অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত সৃজীব চন্দ্র রায়, তার সহযোগী কালু ও রফিক গ্রেপ্তার হয়েছে বর্তমানে কারাগারে আছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।