ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

কলাপাড়ায় গ্রাম-শহরের সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যান ট্রলি-হামজা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২:৪০, ১৭ মার্চ ২০২৫

কলাপাড়ায় গ্রাম-শহরের সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যান ট্রলি-হামজা

স্থানীয় ভাবে দেওয়া নাম হামজা বা ট্রলি , ছবি: জনকণ্ঠ।

নেই রোড পারমিট। তারপরও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহর-বন্দর, গ্রাম। মাত্রাতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করে পাকা সড়ক মহাসড়কে ফ্রী স্টাইলে চলাচল করছে। অথচ এটি কোন যান নয়। কৃষিকাজে ব্যবহারের এক ধরনের উপকরণ। কিন্তু দৈত্যাকৃতির যন্ত্রটি ট্রাকের বডি লাগিয়ে এখন সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

গ্রামীণ জনপদের কাদা মাটির সড়কগুলো লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে। বাদ যায়নি এলজিইডির নির্মিত উপজেলার অভ্যন্তরীন পাকা সড়কগুলো। সব বেহাল দশা করা হয়েছে। দৈত্যাকৃতির ওই যানের চাকার বিটে পিস্ট হয়ে অধিকাংশ সড়ক খানা-খন্দে একাকার হয়ে গেছে।

স্থানীয়ভাবে হামজা কিংবা ট্রলি বলা হয় এই যানকে। অবৈধ এই যানের চাকায় পিস্ট হয়ে মানুষ হতাহতের একাধিক ঘটনা ঘটলেও বন্ধ হয়নি সড়কের চলাচল। স্থানীয় নিয়ন্ত্রণকারী সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে এসব অবৈধ যান সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা করে দেওয়া হয়েছে। মানুষের যোগাযোগে ভোগান্তির কারণ হয়েছে এই অবৈধ যানবাহন। এসব কৃষি যান সরকারিভাবে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকির বিনিময় কৃষকের নাম দেখিয়ে এক শ্রেণির প্রভাবশালী  লোক হাতিয়ে নেয়।

যা বর্তমানে কৃষিকাজ বাদ দিয়ে ভাড়ায় মালামাল বহনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কলাপাড়ায় শতাধিক এমন অবৈধ যান রয়েছে। ইট-পাথর, রড,বালু থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য এসব অবৈধ যানে পরিবহন করা হয়। ছয় চাকার এই যান এখন গ্রামীণ সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপন্ন করে দিচ্ছে।

এসব প্রতিকারে কেউ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। এখানকার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ উপজেলা পরিষদের সভায় বহুবার অবৈধ এই যানের সড়কে চলাচল বন্ধের দাবি উত্থাপন করেছেন। কিন্তু কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

মহিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী ফজলু গাজী জানান, যদিও মানুষের খরচ কম হওয়ায় এই যান ব্যবহার করছে। তারপরও এই ট্রলি গাড়িগুলো চলাচলের কারণে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যায়। মাটির রাস্তা তো একেবারে শেষ করে দেয়। তার মতামত রাস্তাগুলোও আরও ভালো মানের করা প্রয়োজন।

ছলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সোবাহান জানান, অবৈধ এই ট্রলি হামজা রাস্তায় চলাচল বন্ধ না করলে রাস্তাঘাট ঠিক রাখা যাবে না। এক কথায় এই অবৈধ ট্রলি-হামজার কারণে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়েছে।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন জানান, মূলত সরকার ভর্তুকি মূল্যে কৃষি উপকরণ হিসেবে অনেকগুলো কৃষকের মাঝে সরবরাহ করেছে। যা কৃষি জমি চাষাবাদ ও কৃষি উপকরণ সরবরাহের কাজে ব্যবহার করার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইট-বালু, রড সিমেন্টসহ বাণিজ্যিক কাজে এসব ব্যবহার হচ্ছে।


এলজিইডির কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান জানান, এখানকার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থাপন করবেন বলে জানান। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো রবিউল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা পরিষদের সভায় বিষয় টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন।
 

শহীদ

×