
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সারা জাগানো ফুটবল খেলোয়াড় দেওয়ান হামজা চৌধুরী হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার নঘাট গ্রামের নিজের বাড়িতে এসেছেন।
সোমবার বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে মা, স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এরপর সড়ক পথে তিনি হবিগঞ্জের নঘাটে এসে পৌঁছান বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে।
পরে নিজ বাড়িতে তৈরি মঞ্চে তাকে আনা হয়। আনন্দ উৎসবে ফুল দিয়ে করণ করার পরে তিনি কয়েক সেকেন্ডের বক্তব্য শুধু বলেন- বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। তার পূর্ণ বক্তব্য না শুনতে পেরে শ্রোতারা হতাশ হয়েছেন। অনেকে আবার তাকে ভালো করে এক নজর দেখতেও পারেননি। কয়েক সেকেন্ডের বক্তব্য দিয়ে তিনি ঘরে চলে যান।
এর আগে সকাল থেকে শত শত শ্রোতা ও সংবাদকর্মী দেওয়ান হামজা চৌধুরীর বাড়িতে জড়ো হন। তারা অপেক্ষা করতে থাকেন হামজা চৌধুরীর। তবে সন্ধ্যার পরে সাংবাদিকদের অনুরোধে নিজ ঘরে প্রেস কনফারেন্স করে হামজা চৌধুরী বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এর আগেও স্নানঘাট গ্রামে এসেছিলেন হামজা চৌধুরী।
তবে এবার তার আসায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এবার তিনি এসেছেন নিজ দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলতে।
আগামী ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ দিয়েই বাংলাদেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হবে হামজা চৌধুরীর।
দেশের হয়ে খেলতে এসেছেন, তাই আনন্দের শেষ নেই হবিগঞ্জবাসীর। বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। হামজাকে বরণে পথে পথে তোরণ নির্মাণ করা হয়। বাড়ির প্রবেশ পথেও তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতা সারার জন্য প্রস্তুত করা হয় একটি মঞ্চ। অতিথিদের আপ্যায়নে রান্নাবান্নার আয়োজনও করতে দেখা গেছে।
স্থানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- দেড় বা ২ বছর বয়স থেকেই তার দেশে আসা শুরু কিন্তু এবারের আসাটা ভিন্ন। সাথে আসছেন স্ত্রী, সন্তানরাও। তাদের জন্য বাংলাদেশে এটি প্রথম সফর। বধূ প্রথমবার আসছেন শ্বশুরালয়ে। তাই বিদেশি বধূকে বরণে ব্যাপক আয়োজন করেছেন স্বজনরা। লাইটিং করা হয়েছে পুরো বাড়িতে। আগত অতিথিদের ইফতারও করানো হয়।
হামজা চৌধুরীর চাচা দেওয়ান মাসুদ চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সালে সর্বশেষ দেশে এসেছিল হামজা। ২০২২ সালে সে বিয়ে করে। এরপর আর তার দেশে আসা হয়নি। আমরা আনন্দে উদ্বেলিত। ভাতিজার সাথে এবার তার স্ত্রী এবং নাতি, নাতনিদের আমরা দেখেছি। মূলত তাদের বরণ করতেই বাড়ি সাজানো হয়েছে। আমাদের মধ্যে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে, যা আসলে বলে বোঝানো যাবে না। শুধু আমাদের বাড়ি নয়, জেলাজুড়ে মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
হামজা চৌধুরীর বাবা দেওয়ান গোলাম মোর্শেদ চৌধুরী বলেন- অনেকেই সংবর্ধনার আয়োজন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি বারণ করেছি। একে তো রমজান মাস। আবার সে লম্বা বিমান সফর করে আসছে। সে অনেক ক্লান্ত। তাই কাউকে কষ্ট দিতে চাইনি। বলেছি এটিই তো শেষ আসা নয়।
যেহেতু দেশের হয়ে খেলবে পরেরবার এলে সংবর্ধনা দেওয়া যাবে। এবার আমি নিজে বাড়িতে ছোট্ট আয়োজন করেছিলাম। যেহেতু বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন এসেছে, তাই সবার সম্মানে এ আয়োজন। ছোট্ট একটি মঞ্চ তৈরি করেছিলাম। এখানে সবার সাথে কুশলবিনিময় করলো, তারপর সবাইকে নিয়ে ইফতার। ব্যস, এটুকুই। একটি রাত বাড়িতে থাকাই মূল উদ্দেশ্য। মঙ্গলবার ঢাকায় চলে যাবে সবাই।
শিলা ইসলাম