
মামা ও ভাগ্নে
প্রশাসন ও সাংবাদিকের ভয় দেখিয়ে এক দিনমজুরের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন আরিফ হোসেন তালুকদার নামের এক ছাত্রদল নেতা। এসময় এলাকাবাসীর সাথে বাগবিতন্ডার একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ওই ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগি (মামা) সেলিম রাঢ়ীকে আটক করে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে জেলার হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের মাষকাটা গ্রামের রতন রাঢ়ীর বাড়িতে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মারধরের শিকার সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আরিফ হোসেন তালুকদারসহ দুইজনকে আটক করলেও কিছু সময়ের মধ্যে রহস্যজনক কারনে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে পুরো উপজেলাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে হিজলা উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মহসিন সিকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উপস্থিত উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংগঠনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক গাজী সাইদুল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে কোন ব্যক্তির দায় সংগঠন বহন করবে না।
রবিবার দিবাগত রাতে মাষকাটা গ্রামের দিনমজুর আবুল সরদার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, তার যুবতী কন্যার (সোনিয়া আক্তার) নামে মিথ্যে অভিযোগ তুলে গত ১৩ মার্চ দিবাগত রাত বারোটার দিকে তাদের বাড়িতে হাজির হয় ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন তালুকদার ও তার মামা সেলিম রাঢ়ী।
তারা প্রশাসন ও সাংবাদিকের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এসময় তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার যুবতী মেয়েকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে টানা হেচরা শুরু করা হয়।
স্থানীয় যুবক কামরুল হাসান জানিয়েছেন, আবুল সরদারের বাড়িতে ডাকচিৎকার শুনে আমরা স্থানীয়রা এগিয়ে এসে পুরো বিষয়টি শুনে আরিফকে প্রতিবাদ করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাকিব হোসেন নামের এক যুবককে আঘাত করে।
এসময় স্থানীয়রা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করলে আরিফ ও তার সহযোগি সেলিম পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের আটক করে মারধর করা হয়।
হিজলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম জানিয়েছেন, হামলা ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করতে দুইজনকে আটক করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে মুচলেকা দিয়ে আটককৃতদের ছাড়িয়ে নিয়েছেন।
ওসি আরও বলেন, তাৎক্ষনিক কেউ চাঁদা দাবির অভিযোগ করেননি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে সরকারি হিজলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আরিফ হোসেন তালুকদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
শহীদ