ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

ঈদ বাজারে নারী পকেটমারের তাণ্ডব, ক্রেতারা আতঙ্কে

সোহাইল আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ২২:১৭, ১৬ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২২:২২, ১৬ মার্চ ২০২৫

ঈদ বাজারে নারী পকেটমারের তাণ্ডব, ক্রেতারা আতঙ্কে

ঈদের বাজার, ছবি: জনকণ্ঠ

প্রবাসী অধ্যুষিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌরশহরের মার্কেটগুলোতে ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নারী পকেটমার ও চোর চক্র। এ চক্রের সদস্যরা কাস্টমার সেজে ক্রেতাদের ভিড়ের সুযোগ নিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার, কাপড়চোপড়সহ মূল্যবান মালামাল।

বিশেষ করে ঈদের বাজারে প্রচুর মানুষের সমাগম থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে এসব চোরচক্র। যেখানে ভিড়, সেখানেই সক্রিয় হয়ে উঠছে তারা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্রেতাদের মুঠোফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, কাপড়চোপড় ও ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। ফলে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত এই চক্রের শিকার হচ্ছেন।

জানা গেছে, এই চক্রে নারী সদস্যদের সংখ্যাই বেশি। পুরুষ সদস্য থাকলেও মূলত নারীরাই দোকানে ক্রেতা সেজে প্রবেশ করে এবং সুযোগ বুঝে চুরি করে। শনিবার (১৫ মার্চ) অন্তত ১০ থেকে ১২ জন নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে শপিংয়ের জন্য আনা টাকা উধাও হয়ে গেছে।

রবিবার, যেহেতু বাঞ্ছারামপুরে সাপ্তাহিক হাটের দিন, তাই এই সংখ্যা বেড়ে ২০ থেকে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। কদমতুলী এলাকার এক ক্রেতা, জাহানারা বেগম, বলেন, "বাঞ্ছারামপুর শফিক মার্কেটে এসে কাপড় কেনার সময় দেখি আমার ১০ হাজার টাকা আর ব্যাগে রাখা আধা ভরি ওজনের কানের দুল নেই। ব্যাগ কেটে নিয়ে গেছে।"

শুধু তাই নয়, শনিবার দুপুরে পৌরশহরের আমেনা প্লাজা এলাকায় একটি জুতার দোকানে চুরি করতে গিয়ে দুই নারী চোর চক্রের সদস্য স্থানীয় ব্যবসায়ীদের হাতে ধরা পড়েন। তবে তারা "এ ধরনের কাজ আর করবেন না" মর্মে স্বীকারোক্তি ও প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের ছেড়ে দেন।

এই ধরনের ঘটনা বাঞ্ছারামপুর পৌর শহরে নতুন নয়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো মার্কেটে এমন ঘটনা ঘটছে। এতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।


শফিক মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী অহিদ মিয়া বলেন, "আমার দোকান থেকে তিনটি দামি বোরকা ক্রেতা সেজে একদল নারী চোর নিয়ে গেছে। এত মানুষ থাকলেও কেউ কিছু বুঝতে পারেনি!

তবে সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বাজারের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা দরকার। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয় এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হয়।

এদিকে, ঈদকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুর পৌরশহরে চোরচক্রের উৎপাত রোধে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ মো‌রশেদুল আলম চৌধুরী বলেন পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে এবং সন্দেহভাজনদের নজরদারিতে রেখেছে।

পু‌লিশ আরও ব‌লেন ক্রেতাদেরও আরও সচেতন হতে হবে। কেনাকাটার সময় ভিড়ের মধ্যে ব্যাগ ও মূল্যবান সামগ্রী নিরাপদে রাখা, অপরিচিতদের প্রতি সন্দেহজনক আচরণ পর্যবেক্ষণ কর‌তে হ‌বে।
 

শহীদ

×