
দেশের সর্বদক্ষিণ সীমান্ত অঞ্চল শাহপরীর দ্বীপে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন নতুন সড়কে লবণ পানি পড়ে ও মাটি বিক্রি চক্রের কারণে বর্তমানে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। এ সড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। প্রতিদিন চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এ দ্বীপে বসবাসকারী অর্ধলক্ষাধিক মানুষকে।
জানা যায়, নতুন সড়কের পাশের এলাকায় রয়েছে লবণের মাঠ। সেখান থেকে লবণ বোঝাই সারি সারি ট্রাক চলাচল করছে এই সড়কের ওপর দিয়ে। সড়কের পাশে সরকারি খাস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালি তুলে বিক্রি করছে প্রভাবশালী চক্র। এসব মাটি ট্রাকে পরিবহনের সময় কাঁচা মাটি রাস্তায় পড়ে একটি আস্তরণ সৃষ্টি হয়। ওই আস্তরণে লবণ পানি ও কুয়াশার স্পর্শে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।
দুই-তিন মাস ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাতভর ট্রাকে মাটি-বালি বিক্রির কার্যক্রম চলছে। পুলিশ ওইসব ট্রাক থেকে টাকা তুলছে প্রতিনিয়ত। এভাবে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক মাটি-বালু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ মানুষের বাড়ি-ঘরে ভরাটকল্পে চড়া দামে বিক্রি করছে। এভাবে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। স্থানীয়রা বলেন, এই সড়কের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধর্ণা দিয়েছি বহুবার। শেষ পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ করে এক দশক পর দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলেছিল দ্বীপবাসীর। দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিললেও সংস্কার করা সড়কে লবণবাহী ট্রাক থেকে নিঃসৃত পানিতে পিচ্ছিল হচ্ছে নতুন মহাসড়কটি। ফলে বিপজ্জনক এ মহাসড়কে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্বীপবাসী পড়ছে নতুন মহাদুর্ভোগে। সড়কটি এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। লবণ পরিবহনে সরকারি নিয়ম পালন করছেন না অসাধু লবণ ব্যবসায়ীরা। নিয়ম থাকলেও লবণবাহী ট্রাকে জিইওট্যাক্স (মোটা ত্রিপল) ব্যবহার করা হচ্ছে না।
এদিকে, এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকবাহী গাড়ি টেকনাফে যায় এবং আসে। আগে থেকে এই সড়ক সম্পর্কে চালকদের ধারণা না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। তাই লবণবাহী ট্রাক থেকে যাতে পানি নিঃসৃত না হয় ও পরিবহনের সময় কাঁচামাটি রাস্তায় না পড়ে, এ ব্যাপারে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।