
ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামে কালের স্বাক্ষী ২০০ বছর পুরোনো নান্দনিক ছতরপুর শাহী ঈদগাহ মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটির নকশা ও কারুকলা সবার নজর কাড়ে। বিশেষ করে মসজিদটির ৩টি গম্বুজ এর সৌন্দর্য আরো বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। মসজিদটি তিন গম্বুজের মসজিদ বা গোলাপি মসজিদ নামে পরিচিত।
জানা যায়, এই মসজিদটি নির্মাণের জন্য আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর পূর্বে ব্রিটিশ আমলে একটি ইটভাটা তৈরি করা হয়েছিল। সেই ইটভাটায় বিশেষভাবে তৈরি বড় আকৃতির ইট দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। যদিও এই মসজিদটি স্থাপনের নির্দিষ্ট কেনো সাল জানা নেই। তবে ১৮৭৬ সালের ব্রিটিশ ম্যাপে এই মসজিদের অবস্থান দেখা যায়। সেই থেকে ধারণা করা হয় এই মসজিদটি ২০০ বছরের প্রাচীন মসজিদ।
সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদটির ৩ গম্বুজের মাঝের ১টি গম্বুজ আকারে বড়। দুপাশের গম্বুজ গুলোর আকার কিছুটা ছোট। ভিতরে এবং বাহিরে চমৎকার কারুকাজ। গোলাপি রংয়ের এই মসজিদটির দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৩ ফুট।
মসজিটির পাশেই রয়েছে অজুখানা ও ইমাম সাহেবের থাকার স্থান। ৩ পাশে বাউন্ডারি ও মসজিদের সামনে বিস্তৃর্ণ ঈদগাহ মাঠ। সবমিলিয়ে মনোরম পরিবেশে এই নান্দনিক মসজিদটি অবস্থিত।
এই মসজিদে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক মুসল্লী পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করেন। মসজিদটিতে শুক্রবার জুমা'আর নামাজ ও মাহে রমজানে তারাবির নামাজে কানায় কানায় পূর্ণ হয় মুসল্লী। মসজিদের ভিতর সংকীর্ণ হওয়ার মুসল্লিদের জায়গা সঙ্কলন হয় না। তাই মাঝেমধ্যে ঈদগাহ মাঠে চট বিছিয়ে নামাজ পড়তে হয়।
মসজিদের মুসল্লিরা জানায়, এটি একটি ঈদগাহ মসজিদ। এখানে তিন গ্রামের মানুষ ঈদের নামাজ পড়েন। প্রতি ঈদে কয়েক হাজার মানুষ একসাথে ঈদের সালাত আদায় করেন। প্রতি ওয়াক্তের নামাজেও এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে নামাজ পড়েন। এইরকম গুম্বজওয়ালা মসজিদ এখন আর সচারাচর দেখা যায় না। তাই অনেকেই ছুটে আসেন এই মসজিদটি দেখতে ও এক ওয়াক্ত নামাজ পড়তে। এইরকম সুন্দর একটি মসজিদে নামাজ পড়ে আমাদেরও খুব ভাল লাগে।
মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ ২১ বছর যাবৎ এই মসজিদে ইমামতি করে আসছি। এখানের মুসল্লিরা খুব আন্তরিক। এরা আমারে খুব মহব্বত করে, আমিও তাদের মহব্বত করি। অর্থের অভাবে আমরা মসজিদের অনেক কাজ করতে পারতেছি না। সরকারিভাবে অনুদান পেলে আমরা কাজগুলো করতে পারব।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আমিনুল হক চৌধুরী জানান, "বিজয়নগর উপজেলার এটি একটি পুরাতন স্থাপত্য। প্রতিদিন অনেক মানুষ এখানে আসে এবং এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাই। এই মসজিদটি নির্মাণ করার জন্য এখানে একটি ইটের ভাটা নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই ইটের ভাটাতে ইট পুড়িয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এই মসজিদটি বিজয়নগর উপজেলার সবচেয়ে পুরাতন মসজিদ।
শিলা ইসলাম