ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শরীয়তপুর

প্রকাশিত: ২১:১৮, ১৫ মার্চ ২০২৫

জেলেদের ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

শরীয়তপুর : দুই মাস কাজ না থাকায় জেলেদের সরকারিভাবে পাওয়া চাল বিতরণে নানা অনিয়ম

শরীয়তপুরে নদীতে ইলিশ ও ঝাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকাকালীন সময় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি ভিজিএফ চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতি মাসে ৪ কেজি করে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের জন্য কার্ড প্রতি ৮০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু মাপে কম দেওয়া ও জেলে কার্ড বিক্রির অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি ইউনিয়নের দায়িত্বরত প্যানেল চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরে নড়িয়া, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার মোট কার্ডধারী জেলে সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। এর মধ্যে ভেদরগঞ্জে ১০টি ইউনিয়নে ৮ হাজার ১শ’ ৮০ জন, নড়িয়া পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ৯শ’ ৯৩ জন, জাজিরা পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৫শ’ ৬৫ জন ও গোসাইরহাট পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নে ৩ হাজার ২শ’ ৫০ জন কাডধারী জেলে রয়েছে। সরকারি নিষিদ্ধকালীন সময় নদীতে ইলিশ ও ঝাটকা আহরণ বন্ধ রাখায় প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে ফেব্রুয়ারি ও মার্চÑ এ দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি করে চাল দিচ্ছে সরকার। ১৫ মার্চ ছিল চাল বিতরণের শেষ দিন। সরেজমিন ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারাবুনিয়া ও গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে ৮০ কেজির পরিবর্তে জেলেদের চাল দেওয়া হয়েছে ৬০ কেজি বা কোনটায় ৭০ কেজি করে। একই চিত্র অন্যান্য ইউনিয়নেও। ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে চাল দেওয়া হলেও সেখানে নেই কোনো চাল পরিমাপের যন্ত্র। প্রকৃত জেলেদের চাল না দিয়ে কার্ড বিক্রি করার অভিযোগও করেছেন জেলে ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। গোসাইরহাটের কোদালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম সাজু মৃধা বলেন, কোদালপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল কালাম মৃধা ৫শ’ টাকা করে জেলেদের কার্ড বিক্রি করে দিয়েছে। প্রকৃত জেলেরা চাল পাচ্ছে না। তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জেলেদের চাল দিয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তিনি। তবে চাল কম দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন কোদালপুর ইউনিয়নের দায়িত্বরত প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন খান। তিনি বলেন, কোদালপুর ইউনিয়নে যে পরিমাণ কার্ডধারী জেলে রয়েছে, সে অনুপাতে চাল দিচ্ছে না সরকার। তাই অনেক জেলে কার্ড না পেয়ে এমন অভিযোগ করছে। এদিকে জেলেদের সরবরাহকৃত চালের বস্তায় লেখা রয়েছে  ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ।’ এ রকম স্লোগান সংবলিত বস্তায় জেলেদের চাল সরবরাহ করায় এলাকায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে শরীয়তপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হুমায়ুন কবির বলেছেন, বস্তার চাল আগে সরবরাহকৃত থাকায় এ রকম স্লোগান রয়েছে এবং ওই স্লোগান মুছে দেওয়ার কথা বলছেন তিনি। 

×