
মাড়োয়ারীদের ঐতিহাসিক বাড়ি জবরদখলের চেষ্টার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
সৈয়দপুরে মাড়োয়ারীদের একটি ঐতিহাসিক বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের দিনাজপুর সড়কে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী সুশীল কুমার আগারওয়ালার পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সুমিত কুমার আগারওয়ালা জানান, তার পূর্বপুরুষরা এ শহরের গোড়াপত্তনের আগ থেকেই এখানে বসবাস করে আসছেন। তিনি জানান, তারা স্বর্গীয় বানিচাঁদ আগারওয়ালার চতুর্থ বংশধর এবং পৈতৃকসূত্রে ৮৬ শতক জমি পেয়েছেন, পাশাপাশি আরও ১৭১ শতক জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়া, পৈতৃক সম্পত্তির বণ্টন নিয়ে আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা (নং ১২১/১৮) চলমান রয়েছে, যার একটি অংশ ওই ঐতিহাসিক বাড়িটি।
তিনি অভিযোগ করেন, শহরের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন চুক্তির ভিত্তিতে বাড়িটি ভাড়া নিয়ে পরে সেটিকে গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেন। কিন্তু গত ৮ মার্চ আলতাফ হোসেন দাবি করেন যে বাড়িটি তার কেনা সম্পত্তি। এরপর দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রায় তিন শতাধিক অজ্ঞাত সন্ত্রাসী জায়গাটি দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় প্রতিবাদ করলে তার ছেলেকে মারধর করা হয়।
সুমিত কুমার আরও অভিযোগ করেন, কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, আলতাফ হোসেন রেলের প্রায় শত কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে রেল কর্তৃপক্ষের মামলা চলমান রয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে ভূমিদস্যু হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এ শহরে কোনো অফিস না থাকায় এই বাড়িটি অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুইবার এই বাড়িতে এসেছিলেন এবং প্রয়াত নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়াসহ কেন্দ্রীয় অনেক নেতারও এখানে যাতায়াত ছিল। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় প্রভাবশালীরা এই বাড়িটি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। যদিও বাড়িটি নিয়ে মহামান্য আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, তবে তারা আদালতের তোয়াক্কা না করেই বিভিন্নভাবে হয়রানি করে চলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার বলেন, "যেহেতু জমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে, তাই উভয় পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে আদালতের রায়ের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।"
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বর্গীয় সুশীল কুমার আগারওয়ালার দ্বিতীয় ছেলে অমিত কুমার আগারওয়ালা, তার মা, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. শামসুল আলম, শেখ বাবলু, মো. শাহিন, এম এ পারভেজ লিটন, পারভেজ আলম গুড্ডু, সাবিনা ইয়াসমিন মাশা, মোখলেছুর রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
সায়মা ইসলাম