
ছবি:সংগৃহীত
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফিরেছেন। সফরের সময় তিনি শরণার্থীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন এবং আসন্ন তহবিল সংকটের কারণে তাদের খাদ্য সহায়তা অর্ধেকে নেমে আসার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এছাড়া, মিয়ানমারের চলমান সংঘাত ও মানবিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগও ব্যক্ত করেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক ব্রিফিং এ জানান, শরণার্থী শিবিরে মহাসচিব রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং শরণার্থীদের প্রধান দুটি বার্তা শোনেন—প্রথমত, তারা নিরাপদে নিজেদের দেশে ফিরতে চায়, এবং দ্বিতীয়ত, শিবিরে তাদের জীবনমানের উন্নতি চায়।
মহাসচিব শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন, যারা শিক্ষার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ হলেও স্বদেশ হারানোর কষ্টে ভুগছে। তরুণ রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। অনেকেই আশঙ্কা করছে, জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তহবিল সংকটের কারণে তাদের খাদ্য সহায়তা মাসিক ১২.৫০ ডলার থেকে ৬ ডলারে নেমে আসবে।
নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অংশগ্রহণ পরিদর্শন করতে গুতেরেস একটি পাটপণ্য প্রস্তুতকেন্দ্রে যান, যেখানে শরণার্থী নারীরা জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করছেন। তিনি তাদের প্রতি সমর্থন জানান এবং আশ্বস্ত করেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।
সন্ধ্যায় মহাসচিব ৬০,০০০ শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন। সেখানে তিনি বলেন, "এটি শুধু খাবার ভাগাভাগির বিষয় নয়, এটি তাদের ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি আমার সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক।" তবে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, "আমরা একটি গভীর মানবিক সংকটের সম্মুখীন। তহবিল সংকটের কারণে অনেক মানুষ কষ্ট পাবে, কেউ কেউ না খেয়ে মারা যেতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "আমার কণ্ঠ থামবে না, যতক্ষণ না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বুঝতে পারে যে রোহিঙ্গাদের জন্য বিনিয়োগ করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব।"
আঁখি