ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

রায়পুরে মুখে রুমাল বেঁধে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরঃ আতঙ্কে সনাতন সম্প্রদায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ০২:০৭, ১৫ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০২:০৭, ১৫ মার্চ ২০২৫

রায়পুরে মুখে রুমাল বেঁধে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরঃ আতঙ্কে সনাতন সম্প্রদায়

ছবিঃ সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের হৃদয়ে আঘাত হেনে শ্রী শ্রী মহামায়া মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মুখে রুমাল বাঁধা এক দুর্বৃত্ত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ৯টার দিকে মন্দিরে ঢুকে এই ঘৃণ্য কাজটি করে। ঘটনায় পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, আতঙ্কে রয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়।

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। মন্দিরের পুরোহিত তখন পাশের বাসায় পূজা দিতে গিয়েছিলেন, আর এই সুযোগেই দুর্বৃত্ত প্রতিমা ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। 

রায়পুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মন্দিরের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ফুটেজে দেখা গেছে, মুখে রুমাল বাঁধা এক যুবক দ্রুত মন্দিরে প্রবেশ করে এবং মুহূর্তেই প্রতিমা ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। পুলিশ কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিমুল সাহা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শনাক্ত করে কঠোর আইনের আওতায় আনতে হবে।"

রায়পুর উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার রায় বলেন, "কিছুদিন আগেই রায়পুর পৌর মহাশ্মশানে কালি মায়ের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সেই ক্ষত শুকানোর আগেই শহরের প্রাণকেন্দ্রে আরেকটি মন্দিরে হামলা হলো। আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে বারবার আঘাত করা হচ্ছে, অথচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও বাড়বে।"

রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, "পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে। কারা, কী উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা উদঘাটন করা হবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।"

এই ঘটনায় সনাতন সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত শুরু করলেও, সাধারণ মানুষের প্রশ্ন—এবারও কি আগের মতো ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবে, নাকি প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পাবে?

ইমরান

×