
.
রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি উপজেলার দর্জি দোকানগুলোতে এখন কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পোশাক তৈরির চাপ বাড়ায় দিন-রাত সেলাই মেশিন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন পোশাকের আনন্দ, নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা স্থানীয় বাজারের দর্জি দোকান। সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষরাই বেশি আসেন এসব দোকানে। কারণ বাজারে তৈরি পোশাকের দাম অনেক বেশি। জেলার পাংশা, গোয়ালন্দ, বালিয়াকান্দি, কালুখালী ও রাজবাড়ী সদর উপজেলার দর্জি দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারের তৈরি পোশাকের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচে নতুন জামা বানাতে তারা ছুটে আসছেন এসব দোকানে। তবে একাধিক দর্জি জানান, বছরের দুইটি ঈদ ও পহেলা বৈশাখ এলেই কেবল তাদের দোকানে ভিড় বাড়ে। বছরের অন্য সময় কাজের অভাব থাকে। অনেকে সংসার চালাতে অন্য পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য হন। অনেকে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন রাজধানীতে। কারণ জেলার স্থানীয় বাজারে দর্জির কাজের নিশ্চয়তা নেই। সারা বছর তেমন কাজ থাকে না। যত টুকু থাকে এতে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। সুতরাং বাধ্য হয়ে কর্মের নিশ্চয়তার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ ছুটছে রাজধানীতে। রাজবাড়ী সদরের দর্জি মুক্তার মিয়া বলেন, ‘ঈদের সময় ভালো আয় হয়, কিন্তু বাকি সময় তেমন কাজ থাকে না। অনেকে অটোরিক্সা চালায়, কেউ কৃষিকাজ করে দিন পার করে।’ তবে দুই ঈদ ও পহেলা বৈশাখে ভালো কাজ থাকে। পাংশার আরেক দর্জি আজাদ মোল্লা বলেন, ‘আগে সারা বছর কাজ থাকত। এখন তৈরি পোশাকের কারণে অনেকে দোকানে আসে না।
এ সময় ষাটোর্ধ্ব গাজী সরদার নামের এক ব্যক্তি বলেন, দর্জির দোকানের পোশাকের মান আলাদা। কারণ এই পোশাক অনেক দিন ব্যবহার করা যায়। অল্প টাকায় বানানো যায়। এক সঙ্গে টাকা লাগে না। বিভিন্ন কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ ছুটে যায় দর্জি দোকানে। আর প্রভাবশালীরা প্রতি সপ্তাহে পোশাক পরিবর্তন করে। আমরা বছরে এক-দুইবার প্রয়োজনে পোশাক ক্রয় করি। গোয়ালন্দ উপজেলার বাসিন্দা সাদেক মোল্লা বলেন, বর্তমান সংসার চালিয়ে নতুন পোশাক ক্রয় করা আমাদের জন্য অসম্ভব। তাই যেখানে কম দাম, সেখানে ছুটে যেতে হয়। তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক বাজারে দাম বেশি, তাই দর্জির কাছে জামা বানাই। দামও কম পড়ে, ফিটিংসও ভালো হয়। আবার টেকে বেশি দিন’।