ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

ইউএনও’র সহযোগিতায় হুইলচেয়ার পেয়ে স্কুলছাত্র বলল—

আবিদুর রহমান নিপু, ফরিদপুর।

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ১৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৫:২৮, ১৪ মার্চ ২০২৫

ইউএনও’র সহযোগিতায় হুইলচেয়ার পেয়ে স্কুলছাত্র বলল—

ছবি: সংগৃহীত।

শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী, তবুও পড়াশোনার প্রতি রয়েছে প্রবল আগ্রহ। বাবা-মায়ের অন্যান্য সন্তানের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্ন। দুটি পা বিকল থাকায় হাঁটতে বা চলতে পারে না। কোলে বা হামাগুড়ি দিয়েই কাটছে তার প্রতিবন্ধী জীবন। হাত দুটি দিয়ে কোনো রকমে লিখতে পারে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান খান।

সে সদরপুর উপজেলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা মোঃ ছাত্তার খান পেশায় একজন রিকশাচালক। তাদের বাড়ি উপজেলার ভাশানচর ইউনিয়নের ছৈজদ্দিন মোল্যার ডাঙ্গী গ্রামে।

মোঃ ছাত্তার খান জানান, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টার সময় ছেলেকে রিকশায় করে স্কুলে পৌঁছে দিতাম। জরুরি ভাড়া থাকলেও ছেলের জন্য কোথাও যেতে পারতাম না। স্কুল ছুটি হলে আবার তাকে বাসায় নিয়ে আসতে হতো।

রহমানের পরিবারে রয়েছে তার আট বছরের একটি বোন। তার মা গৃহিণী। বাবার উপার্জনের টাকায় কোনো মতে চলে তাদের নিম্নবিত্তের পরিবার।

কিছুদিন আগে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান সদরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা। সে সময় তার (ইউএনও’র) চোখে রহমান পড়ে এবং তিনি তার স্কুলে আসার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আব্দুর রহমানকে একটি ইলেকট্রিক হুইলচেয়ার দেওয়া হয়। রহমানের পক্ষ থেকে তার পিতা এটি গ্রহণ করেন। হুইলচেয়ার পেয়ে রহমান আবেগাপ্লুত হয়ে যায়। ইউএনও তাকে ঈদের জামাকাপড় দেওয়ারও আশ্বাস দেন।

রহমান বলেন, "আমি অনেক খুশি হয়েছি। এবার আমি সহজেই স্কুলে যেতে পারবো। আগে বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমাকে স্কুলে নিয়ে আসতো। স্কুলে গিয়ে এক বেঞ্চেই বসে থাকতাম, কোথাও যেতে পারতাম না। এখন গাড়িটির কারণে একটু ঘোরাফেরা করতে পারবো।"

এ বিষয়ে ইউএনও জাকিয়া সুলতানা জানান, "বিদ্যালয়ে সরকারি কাজে গেলে আমি রহমানকে দেখতে পাই। তার চলাচলের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের প্রতি সকলের যত্নশীল হওয়া উচিত। এতে তাদের মানসিক অবস্থাও ভালো থাকে।"

নুসরাত

×