মানববন্ধন
বরিশালের গৌরনদীতে খাল পুনঃখননে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ওই এলাকার ভূক্তভোগী কৃষকরা।
উপজেলার বার্থী গ্রামের ইরি-বোরো ও পান চাষি আব্দুল গনি সরদার বলেন, বিএডিসির ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় বার্থী গ্রামের আজিজ ফকিরের বাড়ির সামনে থেকে পশ্চিম বার্থী খ্রিষ্টান বাড়ি পর্যন্ত এবং ডুমুরিয়া গ্রামের উত্তর সীমানা থেকে বার্থী ৭৫ ফুট ব্রিজ পর্যন্ত চার কিলোমিটার খাল পুণঃখননের কাজ পায় আজাদ এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ করে আব্দুল গনি সরদার বলেন, ঠিকাদারের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে ও পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে খালের এক পাড়ের জমির মালিকদের গাছপালা কেটে ও পান বরজ ভেঙ্গে নিতে বাধ্য করেন। এরপর ঠিকাদারের লোকজন এস্কেভেটার (ভেকু) চলাচলের জন্য খাল পাড়ের ফসলি জমি কেটে জমির ভেতর মাটি ফেলে রাখে।
উপজেলা বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, এস্কেভেটার দিয়ে খালের ভেতরের এক-তৃতীয়াংশ থেকে কিছু কাঁদামাটি কেটে পূর্বের কাটা মাটির উপরে ফেলে প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও এস্কেভেটার চলাচলের জন্য পশ্চিম বার্থী পুরানো জামে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠে মুসল্লীদের যাতায়াতের প্রায় ১১শ’ ফুট মাটির রাস্তার মাটি কেটে খালের ভেতর ফেলে আবার খাল থেকে ফেলা মাটির অধিকাংশ তুলে রাস্তায় ফেলা হয়েছে। এতে রাস্তা আগের চেয়ে প্রায় ৩/৪ ফুট নিচু হয়ে রাস্তা ধসে পরেছে। খালে যে মাটি ফেলা হয়েছিল তাও রাস্তায় তোলা হয়নি।
বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু বাশার সরদার বলেন, ভেকু দিয়ে খালের ঢাল কাটার কারণে খালপাড়ের ফসলি জমি, বাড়ি, পান বরজ ও মাটির রাস্তা ধসে খালের ভেতর পরে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খাল পুনঃখননের নামে খাল ভরাট করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিডিউল অনুযায়ী খাল পুনঃখনন না করার কারণে ও খাল পুনঃখননে ব্যাপক অনিয়-দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদসহ ফসলি জমি-মসজিদের রাস্তার ক্ষতিপূরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিক্ষুব্ধরা খাল কাটার এস্কেভেটার মেশিন (ভেকু) বন্ধ করে দিয়েছে।
একই দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বার্থী ও ডুমুরিয়া গ্রামের সর্ব্বস্তরের চাষিদের ব্যানারে পশ্চিম বার্থী ব্রিজ নামকস্থানে বার্থী-ভালুকশী সড়কে দুই শতাধিক কৃষক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো. শাহিন কৃষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সিডিউল অনুযায়ী খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে।
বরিশাল বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী আতায়ী রাব্বি বলেন, সিডিউল অনুযায়ী প্রতি কিলোমিটার খাল পুনঃখননে ঠিকাদার সর্বনিন্ম ১১ লাখ টাকা বিল পাবেন। খাল পুনঃখননে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সিডিউলের কপি পেতে হলে তথ্য অধিকার আইনে বরিশাল বিএডিসি অফিসে আবেদন করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শহীদ
