
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর ইসলামপুরের পাইকারি বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে
ঈদ উৎসবে নতুন পোশাকে সাজবে মুসলিমরা। এখন থেকেই ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেচা-বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন পাইকাররা। ঈদকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ বেচাকেনার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। দেশের বৃহত্তম পাইকারি কাপড়ের বাজার পুরান ঢাকার ইসলামপুরে। সেখানে বইছে বেচাকেনার ধুম।
সালোয়ার কামিজ, থ্রি পিস, পাঞ্জাবি, শাড়ি, লুঙ্গি ও বোরকার নানা ডিজাইনের কাপড় পাওয়া যায় এখানে। রয়েছে দেশী-বিদেশী খ্যাত-অখ্যাত ব্র্যান্ডের কাপড়ও। বিভিন্ন ধরনের থান ও গজ কাপড় দেশী-বিদেশী শার্ট-প্যান্ট ও গজকাপড় সারি সারি করে রাখা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে এই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মালামাল বিক্রিতে ব্যস্ত দোকানি ও কর্মীরা। কেউ বা কাপড় দেখাচ্ছেন, কেউ কেউ করছেন দরদাম। এক ক্রেতাকে দেখানো শেষ হলেও অন্য ক্রেতাকে কাপড় দেখাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। তাই ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ইসলামপুর এখন জমজমাট। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দেশী কাপড়ের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ এবং বিদেশী কাপড়ের বার্ষিক চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশই পূরণ করে থাকে ইসলামপুরের ব্যবসায়ীরা।
ইসলামপুরে রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় মার্কেট। তার মধ্যে অন্যতম চায়না মার্কেট, এসি মার্কেট, লায়ন টাওয়ার, আইসিটিটি টাওয়ার, জেফসেল মার্কেট, কেহাবুল্লাহ মার্কেট, ইসলামপুর প্লাজা, জাহাঙ্গীর টাওয়ার, দৌলত কমপ্লেক্স, রয়েল টাওয়ার, হায়াত-দৌলত শপিংমল, মনসুর মার্কেট, হামিদ ম্যানশন ইত্যাদি।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঞ্জাবি মানভেদে সিকোয়েন্স কাপড় প্রতি গজ ৫০০-৮০০ টাকা। একটি পাঞ্জাবি তৈরিতে আড়াই গজ কাপড় নিলে সব মিলিয়ে ২০০০-৩০০০ টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া পাঞ্জাবির জন্য চিকেন কারি কাপড় প্রতি গজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-১০০০ টাকায়। মাল্টি চিকেন কাপড় বিক্রি হচ্ছে প্রতি গজ ৭০০-১২০০ টাকা। এ ছাড়া তুলনামূলক কম দামে পাকিস্তানি গজ কাপড় ২০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবির জন্য চায়না কাপড় প্রতি গজ ১২০ ও থাইল্যান্ডের ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বছর মানভেদে দেশী কাপড়ের থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। দেশির কাপড়ের মধ্যে সুতার থ্রি পিসের দাম বেশি। এ ছাড়া বাটিক, বুটিক্স, জয়পুরী, নায়রা, মুসলিম কটন, ডিজিটাল প্রিন্ট, অ্যাম্ব্রয়ডারি, চিনিগুড়া জরজেটসহ বিভিন্ন রকমের থ্রি-পিস রয়েছে। একটি জয়পুরী থ্রি-পিস মানভেদে ৫০০-৬৫০ পর্যন্ত রয়েছে। প্রিন্টের থ্রি পিস ৪৫০ থেকে শুরু ১৫০০ পর্যন্ত রয়েছে। বুটিক্স, মুসলিম কটন রয়েছে ৬০০-১২০০ টাকা। অ্যাম্ব্রয়ডারি পাওয়া যাচ্ছে ৭৫০-২০০০ টাকা পর্যন্ত।
পপলিন কাপড় বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা গজ দরে। বিদেশী চায়না ও ভারতের কাপড়ের মধ্যে মানভেদে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত গজ রয়েছে। এ ছাড়া এবার ক্রেতাদের পছন্দ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইনডিয়ান থ্রি-পিস। ইসলামপুরে ১৬০০ থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকার পর্যন্ত থ্রি পিস রয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে শার্ট ও প্যান্টের কাপড় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস শার্টের কাপড় মানভেদে ৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। শার্ট প্যান্টের কাপড়ের মধ্যে রয়েছে ফাইন কটন, লিলেন কাপড়, অক্সফোর্ড ফেব্রিক, পপলিন ফেব্রিক কাপড়ের প্যান্ট শার্ট। ঈদ উপলক্ষে পাকিজা, বি প্লাস, স্ট্যান্ডার্ডসহ বিভিন্ন দেশি ব্র্যান্ডের শাড়ি রয়েছে। মানভেদে এসব শাড়ি ৭০০-২০০০ পর্যন্ত রয়েছে। লুঙ্গি রয়েছে সর্বনি¤œ ৪০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে এই বছর পাইকারি প্রতিটি কাপড়ে ৪০-৭০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে জামা-কাপড়ের দামও বেড়েছে। প্রতিটি থ্রি-পিস গতবারের চেয়ে ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিদেশি গজ কাপড়ের দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা।