
নসিমন-করিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা অবাধে চলাচল করছে
রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন মহাসড়কে প্রায় চার শতাধিক নসিমন-করিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা অবৈধ যানবাহন অবাধে চলাচল করছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়ছে সাধারণ যাত্রী ও যানবাহনের চালকরা। তবে হাইওয়ে পুলিশ বলছে নিয়মিত অভিযান চলছে, প্রতি মাসে মামলা হচ্ছে গড়ে ১৫০টি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া থেকে কুষ্টিয়া এবং বসন্তপুর থেকে কুষ্টিয়া মহাসড়কে দুটি হাইওয়ে থানা রয়েছে। রাস্তায় হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশও কর্মরত থাকে। কিন্তু এর পরও মহাসড়কে ৪ শতাধিক অবৈধ যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এ সকল যানবাহন যাত্রীবহনের পাশাপাশি অতিরিক্ত মালপত্র বহন করে চলাচল করে। শুধু অতিরিক্ত মালপত্রবহন নয়, মহাসড়কে প্রতিনিয়ত চলে উল্টা পথে।
এতে মাঝে মধ্যে মহাসড়কে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকে বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনার হওয়ার বড় কারণ অবৈধ যানবাহন। এ সকল যানবাহনের চালক মহাসড়কের নিয়মনীতি সম্পর্কে অবগত নয়। চালকের কোনো লাইসেন্স নেই। রাস্তার নিয়মনীতি না জানলেও অবৈধ যানবাহন নিয়ে মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়ায়। ফোর লেন মহাসড়কে চলাচল করে উল্টা পথে।
উল্টা পথে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা এবং মালপত্র লোড-আনলোড করে থাকেন। এমন চিত্র দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুম থেকে বাংলাদেশ হ্যাচারী অর্থাৎ প্রায় ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বেশি দেখা যায়।
সচেতন নাগরিক দুর্ঘটনার আশঙ্কা জেনেও এসব অবৈধ যানবাহনে কেন চলাচল করে এবং মালপত্র বহন করে। এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অনেকের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। সকলের একই রকম উত্তর। অল্প ব্যয়ে চলাচল করা সম্ভব। অল্প মালপত্র থাকলে যা বড় গাড়িতে ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে অবৈধ যানবাহনে অল্প ব্যয়ে চলাচল করা সম্ভব হয়।
রাস্তায় বেশি সময় দাঁড়াতে হয় না। সুতরাং জেনে-শুনে কম খরচের আশায় এসকল যানবাহন ব্যবহার করছেন। অনেক সময় ভাড়া কমের আশায় অতিরিক্ত মাল বহন করে যাচ্ছেন।
আরও দেখা যায়, দৌলতদিয়া বাসস্ট্যান্ড, গোয়ালন্দ বাস স্ট্যান্ড, গোয়ালন্দ মোড়, রাজবাড়ী বড়পুল, রাজবাড়ী মুরগি ফার্ম, কালুখালী বাসস্ট্যান্ড, পাংশা বাস্ট্যান্ড, বহরপুর, বালিয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কে এসকল অবৈধ যানবাহন যত্রতত্রভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। এ সময় রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে যাত্রী ও মালপত্র ওঠা-নামা করতে দেখা যায়।
এ সময় একাধিক যানবাহনের চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজবাড়ী শহরে ৪ শতাধিক যানবাহন চলাচল করে। তারা বলেন, প্রয়োজনের তাগিদে মহাসড়কে ঝুঁকি নিয়ে এসব যানবাহন চালাতে হয়। তবে মাঝে মধ্যে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের মামলা খেতে হয়। একাধিক বাসচালক জানান, ‘নসিমন-করিমন মহাসড়কে চলার জন্য উপযুক্ত নয়।
কিন্তু প্রায়ই এগুলো দ্রুতগতিতে চলাচল করে, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে স্থানীয়ভাবে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এসব অবৈধ যানবাহন চালানোর সুযোগ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এসব যানবাহন শুধু দুর্ঘটনার ঝুঁকিই নয়, যানজটও সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ভ্যান বেপরোয়া গতিতে চলায় পথচারীরাও অসহায়তা বোধ করছেন।
জেলার আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম শেখ মোবাইল ফোনে বলেন, প্রতিনিয়ত মহাসড়কে অবৈধ যানবাহনের অভিযান পরিচালনা করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ৫টি অবৈধ যানবাহনে মামলা করা হয়। সেই হিসেবে মাসে ১৫০টি নসিমন-করিমন, ব্যাটারিচালিত অবৈধ যানবাহনের মামলা করা হয়। তিনি আরও জানান, সামনে ঈদ। এসময় অভিযান আরোও বেশি করা হবে।