ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

জয়পুরহাট

স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ ৮ মাসেও শেষ হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ৯ মার্চ ২০২৫

স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ ৮ মাসেও শেষ হয়নি

.

জয়পুরহাট স্টেডিয়ামের সংস্কারের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে জেলার অনুশীলনসহ সকল প্রকার খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতি ও উদাসিনতার কারণে চার মাসের মধ্যে মাঠ সংস্করের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৮ মাসেও সেই কাজ শেষ না হওয়ায় অনুশীলন ও সর্বপ্রকার খেঠলাধুলা বন্ধ রয়েছে। ফলে অনুশীলন করতে খেলোয়াড়দের যেতে হচ্ছে খেলার অনুপযোগী অন্য কোনো মাঠে। ঠিকমতো অনুশীলন করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে খেলোয়াড়রা। স্টেডিয়ামের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি খেলোয়াড় ও ক্রীড়া অনুরাগীদের। তবে সংস্কারের কাজ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, ১৯৭৭ সালে শহরের রূপনগর এলাকায় ৪ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় জয়পুরহাট জেলা স্টেডিয়াম। সেই স্টেডিয়ামে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে স্টেডিয়ামের মাঠ, প্যাভিলিয়ন, স্বল্প আসনের গ্যালারি সংস্কার কাজের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। কাজের দায়িত্ব পায় হাফসা ট্রেড এন্ড ইন্টারন্যাশনাল নামে ঢাকার এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৪ মাসেই সংস্কার কাজ শেষ করে মাঠসহ স্টেডিয়ামটি বুঝে দেওয়ার কথা ছিল ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু প্রায় ৮ মাস গত হলেও এখনো কাজ ধীর গতিতে চলমান রয়েছে। এ কারণে খেলোয়াড়দের অনুপযোগী অন্য মাঠে গিয়ে অনুশীলন বা খেলাধুলা করতে হচ্ছে। ফলে ভালো কোনো মাঠ না পেয়ে খেলোয়াড়রা অনুশীলন ও খেলাধুলায় দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। নিম্ন মানের মাটি দিয়ে মাঠের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে এমন অভিযোগে উঠলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিম্ন মানের মাটি ইতোমধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। বর্তমান ও প্রাক্তন খেলোয়াড়রা জানান, এক সময় এখান থেকেই অনেক কৃতি খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখলেও মাঠের অভাবে এখন অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে ক্রীড়াঙ্গন। তাই এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। নারী ক্রিকেটার সান্ত¦না আক্তার জানান  জাতীয় ও  বিভন্ন আঞ্চলিক খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য নিয়মিত অনুশীলন করা প্রয়োজন। কিন্তু স্টেডিয়ামটি ৭-৮ মাস ধরে বন্ধ থাকায় সেখানে অনুশীলন করতে পারছে না। ফলে  কোনো দিন সুগারমিল মাঠ, কখনো সিমেন্ট ফ্যাক্টরি মাঠে অনুশীলন করতে হচ্ছে যা খেলার উপযোগী নয়। এসব মাঠে খেলার পিচ, ওয়াশরুম বা ড্রেসিং রুম নেই। এ কারণে আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। খেলোয়াড় অনির্বাণ কুমার ও নাজমুল হোসেন জানান, স্টেডিয়াম মাঠে নিয়মিত অনুশীলন করতাম। বর্তমানে মাঠ সংস্কার কাজ চলমান থাকায় চিনিকল মাঠে এসে অনুশীলন করছি। গত ডিসেম্বর মাসে স্টেডিয়াম মাঠে একটি টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু স্টেডিয়াম বন্ধ থাকার কারণে সেটাও হয়নি। এ ছাড়া মাঠ এবড়ো-থেবড়ো হওয়ায় নিয়মিত অনুশীলন করতে পারছি না। তাই দ্রুত স্টেডিয়ামটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’ এতে করে অনেকেই খেলা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।’ সাবেক খেলোয়াড় তাজ চৌধুরী জানান, স্টেডিয়াম মাঠটি উন্নয়নের নাম করে ৭-৮ মাস ধরে খেলার অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। এভাবে যদি ক্রীড়াঙ্গন বন্ধ হয়ে থাকে তাহলে খেলাধুলায় জেলা আনেক পিছিয়ে পরব। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যেসব নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হতো, তারাও আর আসছেনা। কিছুদিন আগেও আমরা যুব গেমস থেকে ভালো ফলাফল এনেছি। বিভিন্ন জায়গায় টুর্নামেন্ট হচ্ছে সেই প্রস্তুতিও নিতে পারছিনা। দুঃখের বিষয় এ অবস্থা যদি বেশিদিন চলতে থাকে, তাহলে খেলার মান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ক্রীড়া সংস্থার অফিস সহকারী শামসুল হক বলেন, ‘মাঠ সংস্কার কাজ চলমান থাকায় বর্তমান খেলাধুলা সম্ভব হচ্ছে না।  
ঠিকাদার টুটুল হোসেন জানান কাজটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়মতো মাটি না পাওয়ার কারণে কাজের একটু ধীরগতি হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই মাঠ খেলার উপযোগী হয়ে যাবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিপুল কুমার জানান, সংস্কার কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা নির্দেশ দেওয়া হবে।

×