ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

বকশীগঞ্জে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে প্রতারণা

সংবাদদাতা, বকশীগঞ্জ, জামালপুর

প্রকাশিত: ২১:১৯, ৯ মার্চ ২০২৫

বকশীগঞ্জে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে প্রতারণা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলা প্রায় দুই শতাধিক মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক হামিদুর রহমান শেফালী মফিজ মহিলা আলিম মাদ্রাসার এবতেদায়ি প্রধান। তিনি বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোর ইউনিয়নের মধ্যপলাশতলা গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। ওই প্রতারক হামিদুর রহমানের বিচার দাবি করেছেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোর ইউনিয়নের মধ্যপলাশতলা গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে হামিদুর রহমান ২০১৯ সালে গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে এবং সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে প্রত্যেকের কাছে থেকে ৫ থেকে ৮ হাজার করে টাকা নেন। টাকা নেওয়ার পর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদেরকে পরিচয়পত্র ও সনদপত্রও দিয়েছেন ওই প্রতারক। ‘ঘরে ঘরে জাগ্রত করতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এমন স্লোগান সংবলিত ’৭১-এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের ব্যানারে প্রত্যেককে একটি করে ভুয়া সার্টিফিকেট দেন প্রতারক হামিদুর রহমান। পরবর্তীতে এসব সনদ যাচাই করতে গিয়ে তারা জানতে পারেন, এগুলো ভুয়া। এরপর তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বারবার তাগাদা দিলে হামিদুর রহমান নানা টালবাহানা শুরু করেন। এমনকি ভুক্তভোগীদের মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখান। এই ঘটনায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ বৈঠক ও দেন দরবার হলেও টাকা ফেরত দেননি  প্রতারক হামিদুর।  মুক্তিযোদ্ধা তৈরির কারিগর ওই প্রতারক হামিদুর রহমান নাশকতা মামলায় বর্তমানে জামালপুর জেলহাজতে রয়েছেন। এ ছাড়াও হামিদুরের বিরুদ্ধে অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল করারও অভিযোগ রয়েছে। প্রতারণার শিকার ইসমাইল হোসেন, হাসমত আলী, খলিলুর রহমান, জমিলা বেগমসহ অনেকেই অভিযোগ করেন।  
প্রতারণার শিকার হাছেন আলী বলেন, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে হামিদুর আমার কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা নেয়। সে বলেছিল সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হলে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে সরকারি ভাতা পাবেন। কিন্তু কোনো সুবিধা পাচ্ছিই না। এখন বুঝতে পারছি সে প্রতারণা করে যে সার্টিফিকেট দিয়েছে সেটা ভুয়া। তাই হামিদুরের প্রতারণার বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামিদুর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বেয়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকার কারণে তিনি দাপট দেখিয়ে চলতেন। অন্যের জমি দখল ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে প্রায় ২ শতাধিক মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই হামিদুর। একজন মাদ্রাসা শিক্ষক হয়েও মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন তিনি। তাকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী বলেন, এই  প্রতারক চক্র সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বানানোর কথা বলে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আসলে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা বলতে কিছু নেই। ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

×