ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও

যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরকে ছাত্র-জনতার গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৯ মার্চ ২০২৫

যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরকে ছাত্র-জনতার গণপিটুনি, পুলিশে সোপর্দ

ছবি : সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্র আন্দোলনে হামলাকারী হিসেবে পরিচিত মো. জাহাঙ্গীর ওরফে ‘তলোয়ার জাহাঙ্গীর’ অবশেষে শিক্ষার্থীদের হাতেই ধরা পড়েছেন। রোববার (৯ মার্চ) ঠাকুরগাঁও আদালত চত্বরে ধর্ষণের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের চলমান প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে তিনি ধরা পড়েন। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

জাহাঙ্গীর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পুলিশ লাইন (১নং ওয়ার্ড) এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা মৃত মমতাজ উদ্দিন। জানা গেছে, তিনি স্থানীয় যুবলীগের একজন সক্রিয় সদস্য।

গত বছরের ৪ আগস্ট স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছিলেন। সেই আন্দোলনে হঠাৎ হামলা চালানো হয়। হামলার সময় জাহাঙ্গীরকে হাতে বড় একটি রামদা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ চালাতে দেখা যায়। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এই ঘটনায় জাহাঙ্গীরের নাম সামনে আসে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।

রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও আদালত এলাকায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছিল। সেই সময় শিক্ষার্থীরা দেখতে পান, অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর ঘটনাস্থলে উপস্থিত। মুহূর্তেই তার উপস্থিতির খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ফেলেন এবং চিহ্নিত করার পর তাকে গণধোলাই দেন।

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাকিব বলেন, ‘আমরা তার চেহারা ভালো করে মনে রেখেছিলাম। সে আমাদের ভাই-বোনদের ওপর হামলা করেছিল। আদালত এলাকায় তাকে দেখে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা সবাই মিলে তাকে আটক করি।’

অন্য এক ছাত্র শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ধরনের সন্ত্রাসীরা নানা রূপে আমাদের সমাজে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু আজ সে ধরা পড়েছে, এটাই বড় প্রাপ্তি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি আগেই ব্যবস্থা নিত, তাহলে এতদিন সে এভাবে ঘুরে বেড়াতে পারত না।’

ঘটনার পরপরই পুলিশ এসে উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাকে হেফাজতে নিয়েছি। তার বিরুদ্ধে আগের মামলাগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে প্রশাসন আরও সতর্ক থাকবে।

মো. মহিউদ্দিন

×