
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়ারি গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমী ও অনন্য ইফতার আয়োজন ‘জামাই ইফতারি’! এলাকার ৩০০ জন জামাইকে একত্রিত করে আয়োজিত এই ইফতার মাহফিল পরিণত হয় এক আনন্দঘন উৎসবে, যেখানে সুসম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।
এলাকার বৃদ্ধ থেকে তরুণ প্রায় ৩০০ জামাইকে নিয়ে আয়োজিত এই বিশেষ ইফতারের জন্য সাজানো হয় সুস্বাদু সব খাবার। জামাইদের আপ্যায়নে পরিবেশন করা হয়- সুগন্ধি পায়েশ, সেদ্ধ ডিম, পাকা কলা, নরম পাউরুটি, তাজা খেজুর ও শীতল শরবতসহ নানা মুখরোচক ইফতারি উপকরণ।
এই গ্রামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই এখানকার ছেলেরা একই গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আসছেন। ফলে বাবা-দাদা, নানা- সবারই শ্বশুরবাড়ি একই গ্রামে! এই সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে এবং পারিবারিক বন্ধনকে আরও মজবুত করতে গেল কয়েক বছর ধরে মাহে রমজানের ষষ্ঠ রোজায় আয়োজিত হয়ে আসছে এই ‘জামাই ইফতারি’।
এই ইফতার আয়োজনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো-জামাইদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ। এতে গ্রামের বৃদ্ধ থেকে তরুণ সব বয়সের জামাইরা একসঙ্গে মিলেমিশে ইফতার করেন। এই আয়োজন শুধু আত্মীয়তার বন্ধনই দৃঢ় করে না, বরং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যকেও প্রকাশ করে।
জামাই ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল জামাই বেশ আনন্দিত। তারা জানান, এই বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে গ্রামের সবাই একত্রিত হওয়ার সুযোগ পান, যা পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তোলে। এটি শুধু একটি ইফতার নয়, বরং এক মিলনমেলা, যেখানে আত্মীয়তার বন্ধন আরও দৃঢ় হয় এবং ভালোবাসা আরও গভীর হয়।
জামাই ইফতারের আয়োজন কমিটির সদস্যরা জানান, এই ধরনের আয়োজন করতে পেরে তারা অত্যন্ত আনন্দিত এবং ভবিষ্যতেও এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে। তারা মনে করেন, এই উদ্যোগ শুধু একটি ইফতার আয়োজন নয়, বরং একটি ঐতিহ্য, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাখা উচিত।
এই ব্যতিক্রমী ও হৃদয়স্পর্শী আয়োজন নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, যা গ্রামবাসীদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে। এমন সুন্দর ও অনন্য আয়োজন যেন প্রতিটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে!
আফরোজা