
ছবি : সংগৃহীত
মাদারীপুরে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নিহত সাইফুলের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার (৮ মার্চ) রাতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মামলায় মোহাম্মদ শাহজাহান, মতিন মোল্লা, হোসেন শিকদারের নাম রয়েছে। বাকিদের নাম আপাতত বলা যাচ্ছে না। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, ‘মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের অবৈধ বালু ব্যবসায় ও আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় মোহম্মদ শাহজাহান খান ও মতিন মোল্লা গ্রুপের সঙ্গে সাইফুল সরদারের বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে শনিবার (৮ মার্চ) মোহম্মদ শাহজাহান খান ও সাইফুল সরদারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সাইফুল সরদার, আতাবুর সরদার ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর পলাশ সরদার ঢাকা নেয়ার পর মারা যায়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব সদস্যদের মোতায়েন করে রাখা আছে।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদারের সাথে ড্রেজার ব্যবসা নিয়ে বিরোধ হয় একই এলাকার শাজাহান খানের। এরই জেরে শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির সামনে একা পেয়ে শাজাহান তার লোকজন নিয়ে সাইফুলের উপর হামলা চালায়। প্রাণে বাঁচতে সাইফুল সরদারবাড়ি জামে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করেন। তাকে রক্ষায় সাইফুলের বড় ভাই আতাউরসহ অন্যরা এগিয়ে আসে। এ সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাইফুল ও তার ভাই আতাউরকে।
খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। পরে আহত অবস্থায় ৫ জনকে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। সেখান থেকে ৩জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সাইফুলের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার। এই ঘটনায় মামলা হলে তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।’
এদিকে হত্যাকান্ডের পর নিহতদের ঘরবাড়ি লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারীরা। এতে নিহতদের তিনটি বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা।
সুবল বিশ্বাস/মো. মহিউদ্দিন