
ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ে করতে যাওয়ার পথে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বর মুন্না গড় (২২)। তিনি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাজকী চা বাগানের গড় লাইন এলাকার আসুক গড়ের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৫ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায়, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগান এলাকায়।
ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বরযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর পৌঁছানো হয়নি হবু বর মুন্না গড়ের। বর ও কনের বাড়িতে যখন আনন্দের পরিবেশ বিরাজমান, তখনই এই আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
বরযাত্রীদের সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকাল ৫টায় জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাজকী চা বাগান থেকে ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের নতুন লাইন এলাকার সম্পদ রাজগড়ের মেয়ে সুমি রাজগড়কে বিয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন মুন্না গড়। রাত সাড়ে ৯টায়, কনের বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে মাধবপুর চা বাগানে পৌঁছে বরযাত্রীরা যাত্রাবিরতি নেন। এ সময় বর মুন্না হাসিখুশি অবস্থায় সবার সঙ্গে কথা বলেন এবং কিছু কেনাকাটা করেন।
প্রায় বিশ মিনিট পর বরযাত্রীরা আবার গাড়িতে ওঠার প্রস্তুতি নিলে হঠাৎ বর মুন্না চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে জ্ঞান না ফেরায় দ্রুত কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। তবে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্নাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে বরযাত্রীদের বহনকারী গাড়িগুলো মাধবপুর বাজারে অপেক্ষায় ছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুন্নার মৃত্যুর সংবাদ পৌঁছালে বরযাত্রীরা পাত্রখোলা চা বাগানে কনের বাড়ি না গিয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে বর মুন্নার বাড়ি রাজকী চা বাগানে ফিরে যান।
এমন হৃদয়বিদারক সংবাদ পৌঁছালে কনের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিয়ের আনন্দ মুহূর্তেই পরিণত হয় কান্নায়। বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন হবু বধূর বাবা-মা।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "আমাদের কাছে আনার পর ছেলেটির পালস ও শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ ছিল। তারপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করি।"
সায়মা ইসলাম