
রাজশাহীর মাঠে মাঠে হাওয়ায় দোল খাচ্ছে গমের সোনালি শীষ। বুধবার পবার একটি মাঠ থেকে তোলা
আলু, ধান ও সবজির পাশাপাশি রাজশাহী অঞ্চলে বেড়েছে গমের চাষ। ইতোমধ্যে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হাওয়ায় দোল খাচ্ছে গমের সোনালি শীষ। কয়েকদিনের মধ্যেই মাঠের গম কাটা শুরু হবে। এবার এই অঞ্চলে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষক।
রাজশাহী কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে বেড়েছে গম চাষাবাদ। গত বছর রাজশাহী অঞ্চলে গমের আবাদ হয়েছিল ৯২ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন। এ বছর আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে।
এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন। সেই দিক বিবেচনায় এবার গমের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি গম উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা গমের ভালো ফলন পাবেন। তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় গম চাষাবাদেও আগ্রহী হয়েছেন কৃষকেরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন গমের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন হয়েছে। গম চাষে খরচ কম। অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এক সময় রাজশাহী অঞ্চলে গম চাষে কৃষক আগ্রহ হারালেও কয়েক বছর ধরে বেড়েছে গমের চাষ।
জেলার পবা উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের গম চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া উন্নত জাতের গম বীজ ও সার বিনামূল্যে পেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত ক্ষেতে তার গম অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ভাল থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ পর্যন্ত গমের ফলন আশা করছেন তিনি।
একই উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের কৃষক শরিফুল আলম বলেন, ‘এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে গম চাষাবাদ করেছেন তিনি। উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন। বিঘাপ্রতি ১৫ মণ গম উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পবা উপজেলার পাকুড়িয়ার এলাকার আরেকজন গম চাষি জসিম উদ্দিন বলেন, গম চাষে এবার পাঁচ বিঘা জমিতে প্রায় বিঘা প্রতি সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধারণা করছি, গমের ফলন ভালো হবে এবং বাজারে গম বিক্রি করে বেশি দাম পাওয়া যাবে।