
ছবি: সংগৃহীত
ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও চট্টগ্রাম এই পাঁচ বিভাগীয় শহরে নেওয়ার উদ্যোগ নেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে, পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায়, কিছু শিক্ষার্থীরা যেসব কেন্দ্র পছন্দ তালিকায় প্রাধান্য দিয়েছিলেন তার পরিবর্তে অন্যান্য কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষার আসন দেয়া হয়েছে।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আসন বিন্যাস বাতিল করে নতুন করে আসন বিন্যাস প্রকাশের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
এ বিসয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, 'শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র পছন্দের তালিকা অনুযায়ী কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পছন্দ তালিকার প্রথম কেন্দ্রে আসন পূরণ হওয়ার পর পরবর্তী কেন্দ্রে তার সিট পড়েছে। ভর্তি পরীক্ষা পুরো একটা প্রসেসের মাধ্যমে হয়। সিটপ্ল্যান পরিবর্তন করতে হলে পুরো প্রসেস আবার সাজাতে হবে। সেক্ষেত্রে হয়তো পরীক্ষার তারিখও পরিবর্তন করতে হতে পারে। তবে এই সিটপ্ল্যান আর পরিবর্তন করার সুযোগ দেখছি না।
গতকাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকাল চারটা থেকে ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র ডাউনলোড করার সময় বেঁধে দেয়া হয়। প্রবেশপত্র ডাউনলোডের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপ 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্র' এ অভিযোগ করে পোস্ট করেন ভর্তিচ্ছুরা। পোস্টে শিক্ষার্থীরা লিখেন 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট প্ল্যান বাতিল চাই, শিক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ী নতুন করে সিট প্ল্যান দিতে হবে।'
জিকরা নিহা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বাসা ঝিনাইদহ। একজন মেয়ে হয়ে আমার পক্ষে ঝিনাইদহ থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না। এতগুলো টাকা দিয়ে আবেদন করার পর আবার ওতদূর অনেকগুলো টাকা দিয়ে জার্নি করাটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বেশি দূরে জার্নি করতে পারিনা, অসুস্থ বোধ করি। এছাড়া এতো টাইম জার্নি করার পর পরীক্ষার হলে বসে পরীক্ষা দেওয়াটা কারোর পক্ষেই সম্ভব নয়। এটা আমাদের জন্য অনেক হয়রানি। তাই সবদিক বিবেচনা করে আমাদের প্রত্যেকটা স্টুডেন্টদের মতামত অনুযায়ী পছন্দের বিভাগে সিট দেওয়া উচিত।
রওনক জাহান রোজি নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, আমার বাড়ি বগুড়া হলেও পরীক্ষার সিট পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান রাজশাহীতে যেতে ৩ ঘন্টা লাগে, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বেশি দূরে হয়ে যায় এবং থাকার জায়গা নিয়েও চিন্তায় পড়ে গেছি। অঞ্চলভেদে সিটপ্ল্যান করা উচিৎ ছিল। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এই সিটপ্ল্যান নতুন করে প্রণয়ন করা উচিৎ।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'অনেকেই পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রথমে রেখেছে, কিন্তু আমাদের আসন সংখ্যা সীমিত। এ কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সিট পূর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের এইচএসসির ফলাফল সাপেক্ষে সীটপ্ল্যান করা হয়েছে।'
এই সিটপ্ল্যান পরিবর্তন বা সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, 'ভর্তি পরীক্ষা পুরো একটা প্রসেসের মাধ্যমে হয়। সিটপ্ল্যান পরিবর্তন করতে হলে পুরো প্রসেস আবার সাজাতে হবে। সেক্ষেত্রে হয়তো পরীক্ষার তারিখও পরিবর্তন করতে হতে পারে। এদিকে শীঘ্রই ক্যাম্পাস ছুটি হয়ে যাবে তাই সময়ও কম। তবে এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক কমিটিই সীদ্ধান্ত নিবে।'
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট সংখ্যা কম থাকায় শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তিটা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র পছন্দের তালিকা অনুযায়ী কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পছন্দ তালিকার প্রথম কেন্দ্রে আসন পূরণ হওয়ার পর পরবর্তী কেন্দ্রে তার সিট পড়েছে। এটা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কারণ। এই সিটপ্ল্যান আর পরিবর্তন করার সুযোগ দেখছি না।'
আসিফ